নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের শুরুতেই পুরনো বন্ধুকে আলিঙ্গন করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠকের শেষেও ধরা পড়ল দুই রাষ্ট্রপ্রধানের উষ্ণ সম্পর্কের সেই ছবি। মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ট্রাম্প প্রশাসন। চলতি বছরের শুরুতেই রানার প্রত্যর্পণে সায় দিয়েছিল আমেরিকার একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার রানাকে ভারতে প্রত্যর্পণ করার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “বিশ্বের অন্যতম শত্রু, যিনি ২০০৮ সালে মুম্বই হামলায় জড়িত, তাঁকে বিচারের সম্মুখীন হওয়ার জন্য ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরে মোদী আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান।
ফিরছেন মুম্বই হামলার চক্রী
বৃহস্পতিবার রানাকে ভারতে প্রত্যর্পণ করার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়ে ট্রাম্প বলেন, “বিশ্বের অন্যতম শত্রু, যিনি ২০০৮ সালে মুম্বই হামলায় জড়িত, তাঁকে বিচারের সম্মুখীন হওয়ার জন্য ভারতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরে মোদী আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান।
অস্ত্র বিক্রি বৃদ্ধি করবে আমেরিকা
কেবল ২৬/১১ হামলার চক্রীকে ভারতে ফেরানোই নয়, নয়াদিল্লির হাতে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান তুলে দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন ট্রাম্প। যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মোদীকে পাশে নিয়েই ট্রাম্প জানান, ভারতকে সমরাস্ত্র বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি করবে আমেরিকা।
ঘাটতি মেটাবে তেল আর গ্যাস
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে আমেরিকার বাণিজ্যঘাটতি রয়েছে। অর্থাৎ, আমেরিকা থেকে ভারতে রফতানি হওয়া পণ্যের তুলনায় ভারত থেকে সে দেশে রফতানি হওয়া পণ্যের পরিমাণ বেশি। সেই অসামঞ্জস্য ঘোচাতে ভারত আরও বেশি খনিজ তেল আমেরিকা থেকে কেনার আশ্বাস দিয়েছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প। ‘ভারতের স্বার্থেই’ এই অসামঞ্জস্য কাটানো প্রয়োজন বলে জানান ট্রাম্প। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে মূলত খনিজ তেল এবং গ্যাসের উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
৪১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বাণিজ্য
বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে ট্রাম্প জানান, ভারতের সঙ্গে ‘অপূর্ব’ বাণিজ্যচুক্তি করতে চলেছে আমেরিকা। ‘অপূর্ব’ বাণিজ্যচুক্তির রূপরেখা জানিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা (ভারত এবং আমেরিকা) ইতিহাসের অন্যতম সেরা বাণিজ্যপথ ধরে কাজ করতে সম্মত হয়েছি। এই বাণিজ্যপথ ভারত থেকে শুরু হয়ে ইজ়রায়েল হয়ে, ইটালিকে ছুঁয়ে আমেরিকায় আসবে।” সড়ক, রেল এবং সমুদ্রগর্ভস্থ পথে চলা এই বাণিজ্য দুই দেশের সহযোগী দেশগুলিকেও ছুঁয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। মোদী জানিয়েছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে দুই দেশের বাণিজ্যের অর্থমূল্য হবে ৫০০ বিলিয়ন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৪১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি)।
সীমান্তে সমস্যা মেটাতে আগ্রহী ট্রাম্প
আরও পড়ুন:
ভারত-চিন সীমান্তে সমস্যা মেটাতে ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, “আমি দেখেছি সীমান্তে হাতাহাতি এবং উত্তেজনার পরিস্থিতি। আমার ধারণা সেটা চলছে। যদি পারি তবে আমি (এই বিষয়ে) সাহায্য করতে চাই। কারণ, এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।”
লালরঙা কফি টেবিল বুক
আমেরিকা সফররত মোদীকে একটি লালরঙা কফি টেবিল বুক উপহার দিয়েছেন ট্রাম্প। বইয়ের শিরোনাম, ‘একসঙ্গে আমাদের যাত্রাপথ’। বইয়ের শুরুতেই মোদীর প্রশংসা করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি মহান।” তার নীচে ট্রাম্পের স্বাক্ষর। ৩৫০ পাতার বইয়ে রয়েছে ২০১৯ সালে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকার সময়ে ‘হাউডি মোদী’ অনুষ্ঠানের নানা ছবি। সেই অনুষ্ঠানের পাঁচ মাস পরেই ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠান হয়েছিল গুজরাতের অহমদাবাদে। সেই অনুষ্ঠানের ছবিও রয়েছে সেই বইয়ের পাতায় পাতায়।
‘মাগা’ আর ‘মিগা’
আমেরিকাকে ফের মহান (মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন বা মেগা) করে তোলার স্লোগান দিয়েছেন ট্রাম্প। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মোদী বলেন, “আমরা বিকশিত ভারত তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছি। আমেরিকার প্রেক্ষিতে সেটার অনুবাদ করলে দাঁড়ায় মিগা (মেক ইন্ডিয়া গ্রেট এগেন)। যখন আমেরিকা এবং ভারত একসঙ্গে কাজ করবে, তখন মেগা আর মিগা মিলিয়ে হবে উন্নতির ‘মেগা পার্টনারশিপ’।”