মৃত্যু উপত্যকায় প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে একরত্তি ছেলেটা!
দেশছাড়া, ঘরছাড়া, কপর্দকহীন মানুষগুলো এখন বিদেশি ত্রাণশিবিরের আগন্তুক। সেখানেই ঠাঁই হয়েছে দু’দিনের বাচ্চাটারও। ডাক্তার-বদ্যির বালাই নেই। তবে তাতে অসুবিধে হচ্ছে না মোটেই। জানালেন শিশুটির মা সুলতান মুসলিম। বললেন, “শিবিরের সকলে মিলে মাথায় তুলে রেখেছে ওবামাকে!”
কাঁটাতারের উল্টো দিকে তাকালে এখনও দু’চোখ জলে ভরে যায় সুলতানের। বাড়ির কথা মনে পড়ে। যে রাস্তার ধুলোয় দিনভর হুটোপাটি করে বড় হয়েছেন, এখন সেখানে শুধুই সারি সারি মৃতদেহের স্তূপ। মুণ্ডহীন নিথর দেহ। দিন কয়েক আগে ভূমিষ্ঠ পুত্রসন্তানকে বুকে টেনে নিয়ে সুলতান বললেন, “মনে পড়লে গায়ে কাঁটা দেয়। আমরা সর্বহারা। ছেলেটাকে ওর বাপ-দাদার বাড়িটা কোনও দিন দেখাতেই পারব না!” সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তের কোবান শহরের বাসিন্দা সুলতান ও তাঁর স্বামী মাহমুদ বেকো তাঁদের ছ’জন সন্তানকে নিয়ে দিন কয়েক আগেই দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন সুলতানের জঠরে তাঁর সপ্তম সন্তান। কাঁটাতার পেরিয়ে তুরস্কের জমিতে পা দিতেই প্রসব বেদনা শুরু হয়। প্রায় দু’দশের মধ্যবর্তী ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ জন্ম নেয় তাঁদের সন্তান। নিরাশা নিয়ে দেশ ছাড়লেও এই ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে আশার আলো দেখার চেষ্টা করছেন কুর্দ দম্পতি। তাঁরা মানেন, জঙ্গি নিধনে মার্কিন প্রশাসন তৎপর না হলে প্রাণ বাঁচানোটাও দুষ্কর হতো। তাঁরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন ছেলের নামকরণে। সুলতানের কথায়, “ওর নাম রেখেছি, মহম্মদ ওবামা মুসলিম। এই নামটাই আমাদের আশা। কোনও না কোনও দিন হয়তো মার্কিন সাহায্যে জঙ্গিমুক্ত হবে আমার শহর!”
তাঁরা কোবানকে যে কিছুতেই জঙ্গিদের দখলে চলে যেতে দেবেন না, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে কুর্দ বাহিনী। চার সপ্তাহের টানা লড়াইয়ে কুর্দ গোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে মার্কিন প্রশাসনও। আজও আইএস ঘাঁটি লক্ষ্য করে কোবানে হামলা চালিয়েছে আমেরিকার যুদ্ধবিমান। পাশাপাশি, কুর্দদের সমর্থনে লড়াই করতে ইরাক থেকেও ২০০ জনের একটি পেশমেরগা দল কোবানে এসে পৌঁছেছে। তবে রণে ভঙ্গ দিতে নারাজ আইএস জঙ্গিরা পাল্টা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
দু’বছর আগে অপহৃত এক ব্রিটিশ চিত্র সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়ে আজ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে জঙ্গিরা। সহ-জেহাদিদের প্রতি জঙ্গি সংগঠনের কড়া বার্তা, যারা দেশ ছেড়ে সিরিয়ায় এসে জেহাদে সামিল হয়েছে, তাদের ফিরে যাওয়ার রাস্তা নেই। এক জনও সিরিয়া ছেড়ে দেশে ফেরার চেষ্টা করলে সংগঠন তাদের রেয়াত করবে না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy