তথ্যচিত্রে হ্যারি ও মেগান। ছবি: সমাজমাধ্যম।
প্রথমে কুকথা বলে পরে ক্ষমা চাওয়াকে ওই ট্যাবলয়েডের ‘পাঠক টানার কায়দা’ বলে মন্তব্য করলেন ডাচেস অব সাসেক্স মেগান। শনিবার হ্যারি ও মেগানের এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘ট্যাবলয়েডটি ব্যক্তিগত ভাবে ডাচেসের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্ষমা চায়নি। এ থেকেই স্পষ্ট, ঘটনার জন্য তারা আদপেই অনুতপ্ত নয়। বরং নিজেদের পাঠক সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই শুধু দুঃখপ্রকাশ করে বিবৃতি ছেপেছিল তারা।’’
গত রবিবার, ১৮ তারিখ, একটি ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডে হ্যারি-মেগানকে নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন জেরেমি ক্লার্কসন। তার দিন কয়েক আগেই দু’কিস্তিতে প্রকাশিত হয় হ্যারি-মেগানকে নিয়ে একটি ওটিটি-র তথ্যচিত্র। সেই তথ্যচিত্রে রাজপরিবার ও ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস ও তাঁর প্রয়াত স্ত্রী ডায়ানার ছোট ছেলে হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী, আমেরিকান অভিনেত্রী মেগান। তার পরেই সাংবাদিক তথা রিয়্যালিটি টিভি হোস্ট ক্লার্কসন একটি উত্তর-সম্পাদকীয়তে মেগান সম্পর্কে লেখেন, ‘‘আমি মেগানকে ঘৃণা করি। আমি চাই, ওকে নগ্ন করে ব্রিটেনের রাস্তায় রাস্তায় ঘোরানো হোক। সমবেত জনতা ওকে লক্ষ্য করে বিষ্ঠা ছুড়বে এবং ধিক্কার জানাবে।’’ তিনি আরও লেখেন, ‘‘শুধু আমি নই, আমার প্রজন্মের সবাই মেগান সম্পর্কে এই মতবাদ পোষণ করে।’’
ক্লার্কসনের এই লেখার নিন্দায় সরব হয়েছিলেন ব্রিটিশ পাঠকেরা। দু’দিনের মধ্যে ২০ হাজারেরও বেশি অভিযোগপত্র জমা পড়ে ট্যাবলয়েডটির দফতরে। তা ছাড়া, ব্রিটেনের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে ৬০ জন এমপি ট্যাবলয়েডে খোলা চিঠি দিয়ে জানান, অবিলম্বে ক্লার্কসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এমনকি টিভির যে কোনও অনুষ্ঠান থেকে ক্লার্কসনকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার দাবিও তোলেন কয়েক জন এমপি।
প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে মঙ্গলবারই তাদের ওয়েবসাইট থেকে নিবন্ধটি সরিয়ে দেয় ওই ট্যাবলয়েড। তাতেও সমালোচনা থামেনি। অবশেষে গত কাল, অর্থাৎ নিবন্ধ প্রকাশের সাত দিন পরে, ক্ষমা প্রার্থনা করে বিবৃতি দেয় তারা। লেখে, ‘‘নিবন্ধে যে মতামত প্রকাশিত হয়েছে, তা নিতান্তই লেখকের ব্যক্তিগত। কিন্তু প্রকাশক হিসেবে আমরা এর দায় এড়াতে পারি না। তাই নিবন্ধটি ছাপার জন্য আমরা দুঃখিত ও অনুতপ্ত।’’
ট্যাবলয়েডের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশ করার আগে অবশ্য টুইটারে ক্ষমা চেয়েছিলেন ক্লার্কসনও। তবে মেগান বা হ্যারির কাছে নয়, ক্লার্কসন ক্ষমা চেয়েছিলেন ব্রিটিশ পাঠকদের কাছে। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘‘এত জনকে আঘাত করার জন্য আমি যারপরনাই দুঃখিত। ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকব।’’ ক্লার্কসন আরও জানান, তিনি ‘নগ্ন করে ঘোরানোর’ যে কথা বলেছিলেন, তা ‘গেম অব থ্রোনস’ টেলিসিরিয়ালটির অনুষঙ্গে। এই সিরিয়ালে এ রকমই একটি দৃশ্য ছিল। প্রসঙ্গত, ক্লার্কসনের মেয়ে এমিলি-ও এই নিবন্ধের জন্য সমাজমাধ্যমে তার বাবার কড়া নিন্দা করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy