আফগানিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের আবহে পাকিস্তানে আফগান নাগরিকদের ধরপাক়ড় দশ গুণ বেড়ে গিয়েছে। এমনই উল্লেখ করা হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘রিফিউজি এজেন্সি’-র রিপোর্টে। ওই রিপোর্টে পরিসংখ্যান তুলে ধরে দেখানো হয়েছে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানে মোট ১০০,৯৭১ জন আফগান নাগরিককে গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছে। ২০২৪ সালে এই সংখ্যাটা ছিল তুলনায় অনেক কম, মাত্র ৯০০৬। আর ২০২৩ সালে পাকিস্তানে আটক বা গ্রেফতার হওয়া আফগানদের সংখ্যা ছিল ২৬,২৯৯।
আফগানদের গ্রেফতারি বা আটক করার নিরিখে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের চাগাই আর কোয়েটা জেলা, পঞ্জাব প্রদেশের অ্যাটক জেলা। শুধু ২ নভেম্বর থেকে ৮ নভেম্বরের মধ্যেই গ্রেফতার বা আটক করা হয়েছে ১৩,৩৮০ জনকে, আগের সপ্তাহের তুলনায় গ্রেফতারির সংখ্যা ৭২ শতাংশ বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
আরও পড়ুন:
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তানের বিমান হামলা এবং তার পরবর্তী সময়ে তালিবান সরকারের জবাব দুই দেশের সীমান্তকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনও তলানিতে। পাকিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় টিটিপি। আফগানিস্তানে যে তালিবান ক্ষমতাসীন, তাদেরই একটি শাখা পাক তালিবান। ইসলামাবাদের দাবি, আফগানিস্তান এবং ভারতের মদতে এই গোষ্ঠী পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালায়। কাবুল এবং নয়াদিল্লি বার বার এই দাবি অস্বীকার করেছে।
সংঘাতের আবহে একাধিক বার আফগানদের দেশ ছাড়তে বলেছে ইসলামাবাদ। গত অক্টোবরে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে লেখেন, “আফগানদের এখন নিজেদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের দেশের জমি এবং সম্পদের উপর অধিকার রয়েছে কেবল ২৫ কোটি পাকিস্তানির।” একই সঙ্গে আফগানিস্তানের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের সমীকরণ ব্যাখ্যা করে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী লেখেন, “পাকিস্তান কাবুলের সঙ্গে আগের মতো সম্পর্ক আর রাখতে পারবে না।” এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ থাকার পর গত ১ নভেম্বর পাক-আফগান তোরখাম সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়। তার পর অনেক আফগান নাগরিকই পাকিস্তান ছাড়তে শুরু করেছেন। যদিও গত অগস্ট মাসে যত আফগান পাকিস্তান ছেড়েছেন, সেই তুলনায় এ বারের সংখ্যা অনেক কম বলে জানানো হয়েছে।