সারা বছর হাড়ভাঙা খাটুনি। নিত্যদিনের সেই এক চাকরি জীবন। এক জায়গা। একই সহকর্মী। এমনটা কি ভাল লাগে কারও? ধরুন, বছরে একবার যদি কোনও সংস্থা এক মাসের জন্য সব কর্মীদের দেশের বাইরে বেড়াতে নিয়ে যায়! এমনটা আবার কোথায় হল?
সুইডেনের একটি সংস্থা এমনটাই করছে। মেন্টিমিটার নামে এই স্টার্ট আপ খুলেছিলেন জনি ওয়ার্স্টর্ম নামে এক ব্যক্তি। স্টকহোম থেকে সান ফ্রান্সিসকো এসেছিলেন সংস্থার কর্মীরা। সংস্থায় রয়েছেন প্রায় ৪০ জন কর্মী। ২০১৪ সালে শুরু করার সময় থেকেই সংস্থার ব্যবহারে এমনিই মুগ্ধ ছিলেন কর্মীরা। এক জায়গায় এসে কাজ করা, খাওয়া-দাওয়া, সপ্তাহান্তে সময় কাটানোর ফলে এমনিতেই অন্য একটা টান তৈরি হচ্ছিল প্রায় সমবয়সী কর্মীদের মধ্যে। চার মাস এক সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ায় এসে ছিলেন তাঁরা। এর পরই জনি ঠিক করেন আমেরিকায় অফিস হলেও, প্রতি বছর তাঁরা এক মাস এক সঙ্গে বেড়াতে যাবেন। ২০১৭ সালে গিয়েছিলেন বার্সেলোনা, ২০১৮ সালে গিয়েছিলেন লিসবনে আর ২০১৯ সালে ইতালির পালেরমোতে যাওয়ার কথা তাঁদের।
তবে বেড়াতে যাওয়া বললে ভুল হবে হয়তো। বছরে এক মাস বিদেশে গেলেও কাজ যে বন্ধ থাকে তা নয়, সবাই এক সঙ্গেই থাকেন এক মাস। এক সঙ্গে কাজও করেন। তবে গোটা অফিসের সবাই কাজ শুরু করেন সতেজ মনে, নতুন দেশে। নতুন নতুন ভাবনাও আসে মাথায়।
আরও পড়ুন: আকালের বাজারেও রেকর্ড চাকরির অফার খড়গপুর আইআইটিতে
এই সংস্থা কর্মীদের পরিবারের জন্যও কিন্তু ভেবেছেন। কর্মীদের এই বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে সংস্থার মুনাফা বেড়ে গিয়েছে। কারণ কর্মীদের মন ভাল রয়েছে। আর বাড়ির জন্য মন কেমন করলে সপ্তাহান্তের ছুটিও তো আছেই। সংস্থাই করছে তার ব্যয় বহন। এ ছাড়াও পোষ্যদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)
তিন বছরে মাত্র এক জন কর্মী সংস্থার চাকরি ছেড়েছেন, জানিয়েছেন জন। এই সংস্থার কর্মীরা বিদেশে থাকাকালীন তাঁদের সময়মতো আসতেও হয় না অফিসে। বেড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আলোচনা করেন অফিসের কাজ নিয়ে। আর অনলাইন কাজ করতে কোনও রকম অসুবিধা হয় না। কোনও কর্মী চাইলে সংস্থার সদর দফতরে থেকেও কাজ করতে পারেন, এতেও কোনও অসুবিধা নেই।
আরও পড়ুন: ইন্টারনেট থেকে পর্ন ভিডিয়ো সরাতে কেন্দ্রের পাশে গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক
জন বলেন, ‘‘একই জায়গায় রোজ কাজ করলে মগজে ধুলো পড়ে যায়। তাই বেড়ানোর মাঝে কাজ করলে কর্মীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় তো থাকেই। এ ছাড়া প্রত্যেকের সৃজনশীলতাও বাড়ে। তাই নিজের সংস্থার কর্ম সংস্কৃতি একেবারে অন্যরকমভাবে দেখতে চাই।’’ যদিও এই সংস্থা কতদিন এভাবে চালাতে পারে, তা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে।
(সারাবিশ্বের সেরা সব খবরবাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)