ধরুন রেললাইন ধরে হুহু করে ছুটছে ট্রেন। হঠাৎ বিশেষ কোনও জায়গায় হরিণ বা কুকুরের ডাক শুনতে পেয়ে উল্লসিত হয়ে মুখ বাড়ালেন দেখার জন্য। কিন্তু কোথায় কী!
ঘাবড়াবেন না। কুকুর কিংবা হরিণ নয়, এই সব রকমারি শব্দই আসছে ট্রেনে বসানো একটি বিশেষ স্পিকার থেকে। প্রায়শই রেলে কাটা পড়ে প্রাণ খোয়াতে হয় হরিণ প্রভৃতি পশুকে। জাপানে এ ঘটনা কিছু নতুন নয়। তাই পশুদের সতর্ক করতে এ বার অভিনব বুদ্ধি বার করেছেন টোকিওর রেলওয়ে টেকনিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (আরটিআরআই) এক দল গবেষক।
ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে এই ধরনের ট্রেন চালিয়েও দেখেছেন আরটিআরআইয়ের গবেষকেরা। সেখানকারই এক আধিকারিক জানালেন, মাত্র তিন সেকেন্ডের হরিণের ডাক পশুদের সতর্ক করার জন্য যথেষ্ট। আর ২০ সেকেন্ডের কুকুরের ডাক তাদের ওই জায়গা থেকে পালাতে বাধ্য করবে।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় লোহা সমৃদ্ধ খাবারদাবার হরিণদের বিশেষ প্রয়োজন। ট্রেনের চাকার সঙ্গে লাইনের ঘর্ষণে যে লোহার দাগ পড়ে, সেগুলো চাটতেই বারবার রেললাইনের কাছে ছুটে যায় হরিণ। আর তার ফল অনেক সময়েই হয় ভয়াবহ। রেল লাইনে ট্রেন চাপা পড়ে মরতে হয় তাদের।
ফলে হরিণদের রেললাইন থেকে দূরে রাখা রেলকর্তাদের কাছে চ্যালেঞ্জের কাজ। জাপানের পরিবহন মন্ত্রক সূত্রের খবর, ২০১৬ সালে রেলে হরিণ কাটা পড়ার ঘটনা ঘটেছে মোট ৬১৩টি। এর আগে সিংহের মল রেললাইনের উপর ছড়িয়ে রেখে হরিণ তাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তাতে বিশেষ কাজ হয়নি। একবার বৃষ্টি হওয়ার পরেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে লাইন।
কিছু দিন আগে এমনই আরেকটি অভিনব ভাবনার জন্য ‘গুড ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছিলেন রেলের এক কর্মী ইউকি হিকিতা। রেলে কাটা পড়ার হাত থেকে হরিণদের বাঁচাতে আল্ট্রাসনিক তরঙ্গযুক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছিলেন তিনি। লাইনে কোনও ট্রেন আসার সময় হয়ে গেলে ঠিক সে সময়টুকু হরিণদের রেললাইনে ঢুকতে বাধা দেবে সেই ব্যবস্থা। ইউকির ওই পদ্ধতি অবলম্বন করে রেলে হরিণ কাটা পড়ার ঘটনা অনেক খানিই কমানো গিয়েছে বলে দাবি রেলকর্তাদের। এ বার এই নতুন বুদ্ধি হরিণ রুখতে কতটা কার্যকরী হয়, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy