Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাম্প গণতন্ত্রের বিরোধী, জবাবে জানালেন ওবামা

এক জন বলছেন ভুল অভিবাসন নীতির ফলে দলে দলে সম্ভাব্য জঙ্গি এসে ঢুকছে আমেরিকায়। তিনি মার্কিন মুসলিম সম্প্রদায়কে বিশ্বাস করতেই নারাজ। তাঁকে জবাব দিতে গিয়ে অন্য দু’জন বলছেন আমেরিকায় মুসলিমদের ঢোকা বন্ধ করার কথা বললে গণতন্ত্রের বিরোধিতা করা হবে।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৬ ০৯:০৮
Share: Save:

এক জন বলছেন ভুল অভিবাসন নীতির ফলে দলে দলে সম্ভাব্য জঙ্গি এসে ঢুকছে আমেরিকায়। তিনি মার্কিন মুসলিম সম্প্রদায়কে বিশ্বাস করতেই নারাজ। তাঁকে জবাব দিতে গিয়ে অন্য দু’জন বলছেন আমেরিকায় মুসলিমদের ঢোকা বন্ধ করার কথা বললে গণতন্ত্রের বিরোধিতা করা হবে। পুরো মুসলিম সম্প্রদায়ের উপরে দোষ চাপিয়ে দিলে আমেরিকারই বিপদ বাড়বে। বরং তাঁদের সাহায্য নিয়েই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোয় গণহত্যার পরে মুসলিম মৌলবাদী জঙ্গিদের নিয়ে এ ভাবেই জমে উঠেছে দুই সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্টের তরজা।

অরল্যান্ডোর ঘটনার পর থেকেই মুসলিম-বিরোধী প্রচারের সুর চড়িয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ দিন নিউ হ্যাম্পশায়ারের ম্যানচেস্টারের সভায় কার্যত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের সব রীতিই হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। রাজনীতিকদের মতে, এখন মার্কিন ভোটারদের মধ্যে জঙ্গিদের ভয়ই প্রধান বিষয় বলে মনে করছেন ট্রাম্প। তাই মার্কিন বহুত্ববাদ আর রীতিনীতি নিয়ে আর মাথা ঘামাচ্ছেন না তিনি।

বক্তৃতার শুরুতে অবশ্য মুসলিম জঙ্গি আর মূলধারার মুসলিমদের মধ্যে পার্থক্য বুঝিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু তার পরেই সরাসরি আক্রমণে নেমেছেন তিনি। রিপাবলিকান সম্ভাব্য প্রার্থীর মতে, পুরোপুরি ভুল অভিবাসন নীতি নিয়ে চলছে আমেরিকা। তার ফলে দলে দলে সম্ভাব্য জেহাদি ঢুকছে আমেরিকায়। এ কথা বলতে গিয়ে ২০১৩ সালের বস্টন ম্যারাথনে চেচেন বংশোদ্ভূতদের হামলা ও মিনেসোটার সোমালি সম্প্রদায়ের মধ্যে মুসলিম মৌলবাদ ছড়ানোর নজির টেনে এনেছেন তিনি।

মার্কিন মুসলিম সম্প্রদায়ের দিকে সরাসরি আঙুল তুলেছেন ট্রাম্প। তাঁর দাবি, মুসলিমদের মার্কিন সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে। অরল্যান্ডোর খুনি ওমর মতিন যে মৌলবাদী তা তাঁরা জানতেন। তবু তাঁরা তাকে ধরিয়ে দেননি।

সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের বক্তৃতা আগাগোড়া ভুল আর তথ্যের কারচুপিতে ভর্তি। সিরিয়া থেকে দলে দলে শরণার্থী আসার কথা বলেছেন তিনি। কিন্তু আমেরিকায় সিরিয়া থেকে মাত্র ২,৮০৫ জন শরণার্থী এসেছেন। ওমর মতিনকে ‘আফগান’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। কিন্তু সে জন্মসূত্রে মার্কিন নাগরিক।

ট্রাম্পের নাম না করে কড়া ভাষায় তাঁকে জবাব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তাঁর কথায়, ‘‘অরল্যান্ডো প্রসঙ্গে আমি মুসলিম মৌলবাদ কথাটা বলিনি। কিন্তু বললে কী হত? আইএস মার্কিনদের হত্যা করার পরিকল্পনা বন্ধ করে দিত? না আরও মিত্ররাষ্ট্র আমাদের পাশে দাঁড়াত?’’ বিষয়টি নিয়ে গত কাল ওবামাকে ঠুকেছিলেন ট্রাম্প। তার জবাব দেওয়ার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট সাফ জানাচ্ছেন, মুসলিমদের আমেরিকায় আসতে বাধা দেওয়াটা মার্কিন গণতন্ত্রের বিরোধী।

ট্রাম্পের বিরোধিতা করতে গিয়ে উল্টো পথ ধরেছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন। এ দিন ক্লিভল্যান্ডের এক সভায় তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, আমেরিকার মুক্ত সমাজই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় অস্ত্র। মুসলিম-বিরোধিতা আমেরিকার বিপদ বাড়াবে। বরং মার্কিন মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ বাড়াতে হবে। হিলারির কথায়, ‘‘২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জঙ্গি হানার সময়ে আমি নিউ ইয়র্কের সেনেটর ছিলাম। তখন দেশের সকলে হাত মিলিয়ে সন্ত্রাসের মোকাবিলার কথা বলেছিলেন। সেটাই প্রয়োজন।’’

ট্রাম্পের বক্তৃতা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন রিপাবলিকান দলের শীর্ষ নেতৃত্বই। তাঁরা কবুল করছেন, আমেরিকার মূল মন্ত্রেই আঘাত করছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Obama Trump Democracy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE