Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
বর্ণ-বিক্ষোভে হুমকি
Racial Discrimination

কার্ফু তুলেই ভোট-প্রচারে মরিয়া ট্রাম্প

টালসা শহর ও তার আশপাশের ছবিটা কাল থেকেই বদলাতে শুরু করেছে। সিক্রেট সার্ভিসকে দিয়ে অন্তত দিন তিনেকের জন্য এলাকায় কার্ফু তুলে দিতে বলেছেন মেয়র জি বাইনাম।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২০ ০৩:০৮
Share: Save:

সংক্রমণে রাশ নেই। মৃত্যুমিছিলও থামছে না আমেরিকায়। এ দিকে হোয়াইট হাউসের চিন্তা বাড়িয়েছে হালের ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনও! প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তবু স্বমেজাজেই। নভেম্বরের ভোটে আবার জিততে মরিয়া ট্রাম্প শনিবার বিশাল জনসভার ডাক দিয়েছেন ওকলাহোমার টালসা শহরে। সেখানে অন্তত লাখখানেকের জমায়েত হওয়ার কথা। তার আগে টুইটারে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন ট্রাম্প— ‘‘নিউ ইয়র্ক, সিয়্যাটল কিংবা মিনিয়াপোলিসে যা হওয়ার হয়েছে। কিন্তু এখানে (ওকলাহোমায়) বিক্ষোভ, অশান্তি বা লুটপাটের চেষ্টা হলে অন্য ছবি দেখাব।’’

টালসা শহর ও তার আশপাশের ছবিটা কাল থেকেই বদলাতে শুরু করেছে। সিক্রেট সার্ভিসকে দিয়ে অন্তত দিন তিনেকের জন্য এলাকায় কার্ফু তুলে দিতে বলেছেন মেয়র জি বাইনাম। সে জন্য তাঁকে পাল্টা সৌজন্য দেখাতে ভোলেননি প্রেসিডেন্ট। কিন্তু বিক্ষোভ ঠেকাতে আবার হুমকি কেন? প্রশ্ন উঠছেই।

২৫ মে মিনিয়াপোলিসের রাস্তায় শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েড-খুনের পর থেকেই পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে ফুঁসছে আমেরিকা। বিক্ষোভ দমনে গোড়াতেই গুলি চালানো থেকে শুরু করে সেনা নামানো এমনকি হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন ট্রাম্প। যা নিয়ে ফের অগ্নিগর্ভ হয় পরিস্থিতি। তার পর মাঝে কিছু দিন ‘শান্তি’। বর্ণবিদ্বেষ মুছে ফেলার দাবিতে অনড় প্রতিবাদীদের একটা বড় অংশকে কাল ফেরা দেখা যায় ওয়াশিংটনের সব বড় রাস্তায়। হোয়াইট হাউস এবং লিঙ্কন মেমোরিয়ালের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর পরে তাঁদের একটা অংশ চলে যান ওয়াশিংটন ডিসি-র একমাত্র কনফেডারেট জেনারেলের মূর্তির পাদদেশে। তার পরেই ‘দড়ি ধরে মারো টান’। স্থানীয় টিভিতে দেখা গেল, আক্রোশে উপড়ে ফেলা হচ্ছে জেনারেল অ্যালবার্ট পাইকের মূর্তি, আর দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। সেই ফুটেজ ভাইরাল হতেই টুইট করলেন প্রেসিডেন্ট। সরাসরি পুলিশকে বিঁধেই লিখলেন, ‘‘চোখের সামনে এমন তাণ্ডব দেখেও ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশ হাত গুটিয়ে থাকল? এটা কর্তব্যে গাফিলতিই। দেশের পক্ষে লজ্জা ওই তাণ্ডবকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত ছিল পুলিশের।’’

আরও পড়ুন: জেল থেকে বেরিয়েও আমেরিকায় ফের গ্রেফতার মুম্বই হামলার পাক-চক্রী

বিক্ষোভকারীদের শায়েস্তা করা নিয়ে ট্রাম্প সুর চড়ালেও, আজ ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’-এর পাশেই দাঁড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফ্লয়েড-খুনের তীব্র নিন্দা করে আজ সেখানকার পার্লামেন্টের ভোটে সব ধরনের বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন নেতারা। আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের দাসপ্রথাকে ‘মানবতার উপরে অপরাধ’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ৪৯৩-১০৪ ভোটে পাশ হওয়া ওই প্রস্তাবে। আমেরিকায় পুলিশি নৃশংসতার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি তুলে বুধবার এই ফোরামের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নিহত জর্জের ভাই ফিলোনয়েস ফ্লয়েড। সেই প্রেক্ষিতেই এ দিন এই প্রস্তাব নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমর্থন আসে বুরকিনা ফাসো, সেনেগালের মতো আফ্রিকার দেশগুলি থেকে।

আজ বিক্ষোভ হয়েছে ব্রিটেন, ফ্রান্স-সহ ইউরোপের বেশ কিছু শহরে। পরিবেশকর্মী সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ আজ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘ধৈর্যের বাঁধটা মনে হচ্ছে এ বার ভেঙেছে। না হলে বর্ণবিদ্বেষের মতো বিষয়গুলো সমাজ বরাবর আড়াল করেই এসেছে। এখন প্রতিবাদে সরব হচ্ছে সমাজের একটা বড় অংশ। মানুষ সত্যি‌ই যেন নিজের ভাষা খুঁজে পেয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ব্রিটেনে মৃত বেশি দক্ষিণ-এশীয়রাই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE