ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকাও অস্ত্র ধরবে কি না, সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জন্য দু’সপ্তাহ সময় নিয়েছেন তিনি। কিন্তু আমেরিকা যদি শেষ পর্যন্ত ইরানের উপর হামলা চালায়, ইরানও চুপ থাকবে না বলে আগে থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। সে ক্ষেত্রে তেহরানের প্রত্যাঘাতে বিপাকে পড়তে পারে পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি এবং সেখানে মোতায়েন মার্কিন সেনারা।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি, পশ্চিম এশিয়ায় অন্তত ১০টি দেশে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। সেখান অন্তত ৫০ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার যে দেশগুলিতে আমেরিকার মূল ঘাঁটি রয়েছে, সেগুলি হল— তুরস্ক, সিরিয়া, লেবানন, জর্ডন, ইজিপ্ট, সৌদি আর, কাতার, ইরান, কুয়েত এবং বাহরিন।
এই ১০টি দেশে সব মিলিয়ে আমেরিকার ১৯টি মূল সামরিক ঘাঁটি রয়েছে পশ্চিম এশিয়ায়। তার মধ্যে অন্যতম হল— কাতারের আল উদেইদ বায়ুসেনা ঘাঁটি, বাহরিনে নৌসেনা ঘাঁটি, কুয়েতের ক্যাম্প আরিফজান, ইরাকের আল-আসাদ বায়ুসেনা ঘাঁটি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আল-ধাফরাস এবং তুরস্কের ইনসারলিক। এ ছাড়াও সিরিয়া, ওমান, জর্ডনেও আমেরিকার কিছু ঘাঁটি রয়েছে।
আরও পড়ুন:
ইরাকের বাগদাদ থেকে পশ্চিমে আল আসাদ বায়ুসেনা ঘাঁটিতেই সবচেয়ে মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। সাম্প্রতিক কালে বেশ কয়েক বার এই ঘাঁটিতে হামলাও চালিয়েছে ইরান এবং তাদের সহযোগী বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী। উত্তর ইরাকের কুর্দিস্তান প্রদেশেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
সামরিক বিশেষজ্ঞদের মত, আমেরিকা ইরানে হামলা চালালে তাদেরও পাল্টা হামলায় বড় ক্ষতি হতে পারে বাহরিনে আমেরিকার নৌসেনা ঘাঁটিতে। সেখানেই মোতায়েন রয়েছে আমেরিকার পঞ্চম নৌবহর। প্রায় ৮,৩০০ মার্কিন সেনাও মোতায়েন রয়েছে সেখানে।
আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ ভেঙে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে। আমেরিকা চায় না ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাক। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরান ইতিমধ্যেই ইউরেনিয়ামের বিশুদ্ধতা ৬০ শতাংশে নিয়ে গিয়েছে। পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে এই বিশুদ্ধতার পরিমাণ আরও কয়েক শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে ইরানকে। কিন্তু আমেরিকা চায় এখানেই থেমে যাক ইরান।
কিন্তু ইরান জানিয়ে দিয়েছে, তারা তাদের পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসবে না। এই পরিস্থিতিতে ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকাও যুদ্ধে যোগ দেবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। তাই ইরানও পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার সামরিক ঘাঁটিতেও হামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে।