Advertisement
E-Paper

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিতে আমেরিকার আপত্তি! ইরান সফরে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু কর্তা

ইটালির রাজধানী রোমে আগামী শনিবার থেকে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে বসবে আমেরিকা এবং ইরান। তার আগে আইএইএ বলেছে, তেহরান পরমাণু বোমা বানাতে চলেছে!

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০৭
Share
Save

আমেরিকার সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে দ্বিতীয় দফার আলোচনাপর্বের আগে ইরান সফরে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (আইএইএ)-র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। অন্য দিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ঘিরে উত্তেজনার আবহে ইরান বুধবার জানিয়েছে, কোনও অবস্থাতেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি থেকে তারা পিছু হটবে না।

ইটালির রাজধানী রোমে আগামী শনিবার থেকে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বৈঠকে বসবে ইরান। তার আগে বুধবার ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, ‘‘ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তি করতে চাইলে তেহরানকে অবশ্যই তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ-সহ যাবতীয় পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ ‘বাতিল’ করতে হবে। এর পরেই বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরকচি বলেন, ‘‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকারের বিষয়টি বাতিল করা নিয়ে আমরা কোনও আলোচনা করব না।’’ যদিও গ্রোসির দাবি, ইরান পরমাণু বোমা তৈরির কাছাকাছি চলে গিয়েছে।

ওয়াশিংটন-তেহরানের এই টানাপড়েনের আবহে বৃহস্পতিবার উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করেছেন গ্রোসি। তিনি বলেন, ‘‘ইরানের সঙ্গে এখনও অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। শেষ পর্যন্ত সব কিছুই ঠিক হয়ে যাবে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। চুক্তির নাম ছিল ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ)। তাতে স্থির হয়, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখলে তেহরানের উপর বসানো আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা এবং অন্য কয়েকটি দেশ। এতে উভয় পক্ষই লাভবান হয়েছিল।

কিন্তু ২০১৬ সালে প্রথম বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ট্রাম্প জানান, এই পরমাণু চুক্তি ওবামার ভুল পদক্ষেপ। এর ফলে আমেরিকার কোনও সুবিধা হয়নি। উল্টে লাভ হয়েছে ইরানের। ২০১৮ সালে তাঁর নির্দেশে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসে আমেরিকা। কিন্তু ২০২৪ সালে আইএইএ একটি রিপোর্টে জানায়, ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইরান। তাদের কাছে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়া। ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি নিরাপত্তা পরিষদে খোলা চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেয়, প্রয়োজনে ইরানের পরমাণু অস্ত্রধর দেশ হয়ে ওঠা আটকাতে তারা সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত।

যদিও তেহরানের তরফে বার বারই জোর দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু মাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে এ সব যুক্তিতে চিঁড়ে ভেজেনি। গত মার্চে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলি খামেনেইকে চিঠি পাঠিয়ে পরমাণু চুক্তির জন্য দু’মাসের ‘সর্বোচ্চ সময়সীমা’ বেঁধে দেন ট্রাম্প। সেই সঙ্গে অবিলম্বে আলোচনায় না বসলে সামরিক পদক্ষেপেরও হুমকি দেন। প্রাথমিক ভাবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজ়েকশিয়ানের সরকার আলোচনায় সম্মতি না দিলেও শেষ পর্যন্ত ওয়াশিংটনের চাপে চলতি মাসের গোড়ায় ওমানে দু’তরফের প্রথম মুখোমুখি বৈঠক হয়।

IAEA Nuclear deal nuclear pact Masoud Pezeshkian

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy