মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের কারণে গত দেড় বছরে নতুন করে আরও দেড় লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) সাম্প্রতিক রিপোর্টে এ কথা জানানো হয়েছে। ওই রিপোর্ট বলছে, নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
২০১৭ সালে গোষ্ঠীহিংসা এবং মায়ানমার সেনার হামলার জেরে প্রায় আট লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তার পর এটিই সবচেয়ে বড় শরণার্থী অনুপ্রবেশের ঘটনা। ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, গত জুন পর্যন্ত বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নতুন ১ লক্ষ ২১ হাজার রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করা হয়েছে। অনেককে এখনও পর্যন্ত শনাক্ত করা যায়নি। যদিও তাঁরা সকলেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করছেন।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য ২৭১ কিলোমিটার। গত দু’বছরের যুদ্ধে জুন্টা সেনাকে হটিয়ে তার পুরোটাই দখল করে নিয়েছে বিদ্রোহী জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’-এর বৃহত্তম সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। গত ডিসেম্বর থেকে মংডু, বুথিডং, পালেতাওয়ার শহর-সহ মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে। ওই প্রদেশের সঙ্গেই রয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত। এই পরিস্থিতিতে সেখানে বসবাসকারী কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা মুসলিমের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউনূসের সরকার।
একদা মায়ানমারের শাসক সামরিক জুন্টার ‘চক্ষুশূল’ রোহিঙ্গা মুসলিমরা চলতি যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হয়েছিল! ‘আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মি’ (আরসা), আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজ়েশন (আরএসও)-এর যোদ্ধারা গত এক বছর ধরে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় জুন্টা ফৌজের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়েছে। কিন্তু তাতে ‘শেষরক্ষা’ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা মুসলিমরা নতুন করে আরাকান আর্মির নিশানা হয়েছেন। ফলে আবার বাংলাদেশে নেমেছে শরণার্থীর ঢল।