Advertisement
E-Paper

শুল্কযুদ্ধ ফের এক দফা এড়িয়ে গেল আমেরিকা এবং চিন! দর কষাকষিতে সময় দিতে আরও ৯০ দিন ব্যবসায় ‘সংঘর্ষবিরতি’

গত জুলাই মাসেও সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বৈঠকে বসে আমেরিকা এবং চিনের বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল। তবে ওই বৈঠকেও চূড়ান্ত কোনও ফয়সলা হয়নি। এ অবস্থায় ১২ অগস্টের সময়সীমা আরও বৃদ্ধি করা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৫ ০৯:০৪
(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ফের এক দফা শুল্কযুদ্ধ এড়িয়ে গেল আমেরিকা এবং চিন। বাণিজ্যের দর কষাকষিতে চূড়ান্ত রফাসূত্রের জন্য আরও সময় দিতে চায় দু’দেশই। চিনকে আরও ৯০ দিনের জন্য শুল্ক-ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরে অনুরূপ পদক্ষেপ করল চিনও। আমেরিকার উপর ৯০ দিনের জন্য শুল্কছাড়ের সিদ্ধান্ত নিল তারাও।

এর আগে গত ১২ মে দু’দেশ ৯০ দিনের জন্য শুল্ক সংঘাত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। দু’দেশই একে অন্যের উপর ১১৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে আনে। বর্তমানে চিনা বাজারে মার্কিন পণ্যের উপর ১০ শতাংশ এবং আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর ৩০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রয়েছে। তবে শুল্কে দ্বিপাক্ষিক ‘সংঘর্ষবিরতি’র ওই মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে মঙ্গলবার (১২ অগস্ট)। তার আগেই দু’দেশ আলোচনার জন্য ফের ৯০ দিনের জন্য সংঘাত এড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল।

গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি ঘোষণার পর থেকেই আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্যিক সংঘাত শুরু হয়। দু’দেশই একে অন্যের উপর শুল্ক চাপাতে শুরু করে। যদিও শুরুটা হয়েছিল ব্যথা নিরাময়ের ওষুধ ফেন্টানাইলকে কেন্দ্র করে। ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, আমেরিকার বাজারে নিষিদ্ধ ওই ওষুধটি চিন থেকে তাঁদের দেশে প্রবেশ করছে। তার জন্য শুল্কও চাপান চিনা পণ্যের উপর। পরে এপ্রিলে নয়া শুল্কনীতির সময়ে তা আরও বৃদ্ধি পায়। শুল্কে প্রত্যাঘাত করে বেজিংও। দফায় দফায় দু’দেশই একে অন্যের উপর আঘাত এবং প্রত্যাঘাত চালাতে থাকে। এক পর্যায়ে চিনা পণ্যের উপর মার্কিন শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করে দেওয়া হয়। পাল্টা চিনও ১২৫ শতাংশ শুল্ক চাপায় মার্কিন পণ্যে।

তবে এই উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার আভাস মেলে গত মে মাসেই। মে-র শুরুতে সুইৎজ়ারল্যান্ডের জেনেভায় দুই দেশের উচ্চপদস্থ কর্তারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেন। ওই বৈঠকের পরেই শুল্কযুদ্ধে সাময়িক ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেয় আমেরিকা এবং চিন। তার কিছু দিনের মধ্যেই ১২ মে দু’দেশ ৯০ দিনের জন্য শুল্ক-সংঘাত স্থগিত রাখে এবং বাণিজ্যিক সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু করে। এর পরে গত জুন মাসেও ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে দাবি করেন, তিনি চিনের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছেন। তবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। ট্রাম্পের ওই দাবির পরেও দেখা যায় দু’দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসছেন।

গত জুলাই মাসেও সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বৈঠকে বসে আমেরিকা এবং চিনের বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল। তবে ওই বৈঠকেও চূড়ান্ত কোনও ফয়সলা হয়নি। এ অবস্থায় ১২ অগস্টের সময়সীমা আরও বৃদ্ধি করা হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। মেয়াদ বৃদ্ধি না-হলে দু’দেশের মধ্যে আবার শুল্ক-সংঘাত শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন অনেকে। কারণ, মেয়াদ শেষের পরে ট্রাম্প শুল্ক বৃদ্ধি করলে চিনও তার জন্য প্রস্তুত ছিল। এ অবস্থায় মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে কি না, তা নিয়ে সোমবারও ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তবে স্পষ্ট ভাবে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। শুধু জানিয়েছিলেন, দেখা যাক কী করা যায়। যদিও সূত্র মারফত মার্কিন সংবাদ সংস্থাগুলি তত ক্ষণে দাবি করতে শুরু করে দিয়েছিল যে, সময়সীমা মাঝ-নভেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পও তা-ই ঘোষণা করলেন।

শুল্ক স্থগিত রাখার মেয়াদ বৃদ্ধি না-হলে মার্কিন পণ্যের উপর ২৪ শতাংশ শুল্ক চাপানোর জন্য প্রস্তুত ছিল চিন। তবে ট্রাম্পের ঘোষণার পরে তারাও সেই পথ থেকে পিছিয়ে আসে। চিনা সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইম্‌স’ অনুসারে, ১২ অগস্ট থেকে ৯০ দিনের জন্য ওই শুল্ক স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেজিং। যদিও বর্তমানের ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর থাকবে।

Donald Trump US Tariff US Tariff War China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy