শুক্রবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, তিনি তৃতীয় বিশ্বের সমস্ত দেশের জন্য আমেরিকায় অভিবাসনের দরজা স্থায়ী ভাবে বন্ধ করে দেবেন। তার পরের দিনই পদক্ষেপ করল তাঁর প্রশাসন। ভারতের প্রতিবেশী আফগানিস্তানের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ করা হল। মার্কিন বিদেশ দফতর শনিবার (ভারতীয় সময়) এই তথ্য জানিয়েছে। বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়োও সেই খবর নিশ্চিত করেছেন।
আমেরিকার বিদেশ দফতর সমাজমাধ্যমে আফগানিস্তান নিয়ে বিবৃতি জারি করেছে। বলা হয়েছে, ‘‘আফগান পাসপোর্টে যাঁরা আমেরিকায় আসছেন, তাঁদের ভিসা দেওয়া অবিলম্বে স্থগিত করা হল। আমেরিকার নাগরিকদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে বিদেশ দফতর।’’ এই পোস্টের সঙ্গে রুবিয়ো লিখেছেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিদেশ দফতর সকল আফগান পাসপোর্টধারীকে ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে। দেশ এবং নাগরিকদের সুরক্ষাই আমেরিকার অগ্রাধিকার।’’
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, কিছু দিন আগে হোয়াইট হাউসের সামনে এক বন্দুকবাজের হামলায় আমেরিকার দু’জন ন্যাশনাল গার্ডের মৃত্যু হয়। সারাহ্ বেকস্টর্ম (২০) এবং অ্যান্ড্রু উলফের (২৪) মৃত্যুর পর একাধিক বার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ট্রাম্প। কারণ, যে বন্দুকবাজ তাঁদের উপর হামলা চালিয়েছিলেন, তিনি আফগানিস্তানের নাগরিক। খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে, অভিযুক্ত রহমানুল্লা লাকানওয়াল ২০২১ সালে আমেরিকায় গিয়েছিলেন। সেই থেকে সেখানেই থাকতেন। গুলি করে দু’জনকে মারার পর হোয়াইট হাউসের রক্ষীদের গুলিতে তাঁরও মৃত্যু হয়।
প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় থাকাকালীন আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। যুদ্ধে আমেরিকাকে সাহায্য করার জন্য এটা ছিল আফগানদের ‘পুরস্কার’। সেই কর্মসূচির অধীনেই আমেরিকায় ঢুকেছিলেন অভিযুক্ত বন্দুকবাজ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর পূর্বতন ডেমোক্র্যাট সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ট্রাম্প। যদিও রহমানুল্লা আমেরিকায় সরকারি ভাবে আশ্রয় পেয়েছিলেন ট্রাম্পের আমলেই।
শুক্রবার আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, মার্কিন নাগরিকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সমস্ত তৃতীয় বিশ্বের দেশের জন্য আমেরিকায় অভিবাসনের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে স্থায়ী ভাবে। আমেরিকার নাগরিক যাঁরা নন, তাঁরা সরকারি কোনও সুযোগসুবিধাও পাবেন না। অনুপ্রবেশ বন্ধে জোর দেওয়া হবে। আফগানিস্তান-সহ ১৯টি দেশের নাগরিকদের গ্রিন কার্ড খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানায় ট্রাম্প প্রশাসন। এক দিনের মাথায় আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ করা হল।