ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কিকে পছন্দই করেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাই জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতেও তাঁর অনীহা রয়েছে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা থমকে থাকার মাঝে এমনটাই দাবি করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তৎপরতা দেখাতে শুরু করেছেন ট্রাম্প। বস্তুত, গত বছরের নির্বাচনী প্রচার থেকেই এ নিয়ে মন্তব্য করে আসছিলেন তিনি। তবে দ্বিতীয় দফায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও যুদ্ধ থামিয়ে উঠতে পারেননি ট্রাম্প। যুদ্ধ থামানোর জন্য চাপ দিতে রাশিয়া বৈদেশিক বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা তৈরির চেষ্টা করেছেন। রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর হুমকি দিয়েছেন। এমনকি রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্কও চাপিয়েছেন তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত জ়েলেনস্কির সঙ্গে মুখোমুখি বসাতে পারেননি পুতিনকে।
সম্প্রতি রাশিয়া এবং কিভের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। প্রথমে আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরে হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির সঙ্গেও বৈঠকে বসেন। ওই সময় জ়েলেনস্কির ইউরোপীয় বন্ধুদেশগুলির রাষ্ট্রনেতারাও উপস্থিত ছিলেন হোয়াইট হাউসে। জ়েলেনস্কিদের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পরেই জানা যায়, একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে পুতিন এবং জ়েলেনস্কির মধ্যে। তার পরে ট্রাম্পের উপস্থিতিতে একটি ত্রিপাক্ষিক বৈঠকও হবে। জ়েলেনস্কিদের সঙ্গে বৈঠকের মাঝে পুতিনকেও ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছিল, রাশিয়া এবং ইউক্রেন দু’দেশই দ্বিপাক্ষিক স্তরে আলোচনার টেবিলে বসতে রাজি। তবে এখনও পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। কবে বৈঠক হবে, তা-ও এখনও স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন:
এ অবস্থায় বৈঠক ঘিরে অনিশ্চয়তা নিয়ে সোমবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে প্রশ্ন করা হয় ট্রাম্পকে। জানতে চাওয়া হয়, জ়েলেনস্কির সঙ্গে দেখা করতে কেন এত অনীহা পুতিনের? ওই প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, “কারণ, তিনি (পুতিন) ওকে (জ়েলেনস্কিকে) পছন্দ করেন না।” তবে ট্রাম্পের দাবি, গত সপ্তাহে ফের পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। মস্কো এবং কিভকে সরাসরি আলোচনায় বসানোর জন্যই তিনি পুতিনকে ফোন করেছিলেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। ট্রাম্পের কথায়, পুতিনের সঙ্গে তাঁর ‘ভাল ভাবেই কথাবার্তা’ হয়েছে। তবে কোনও সদর্থক ফল মেলেনি।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, “তাঁর (পুতিনের) সঙ্গে আমার প্রত্যেক বারই ভাল ভাবে আলোচনা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, তার পরেই কিভ বা অন্য কোথাও বোমা পড়ে। ফলে আমি সেটি নিয়ে খুব রেগে যাই।” ট্রাম্পের দাবি, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে চলে আসা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ থামবে বলেই তিনি আশাবাদী। তবে বিষয়টি যে বেশ কঠিন, তা-ও স্বীকার করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পুতিন এবং জ়েলেনস্কি শেষ পর্যন্ত মুখোমুখি বসবেন কি না, তা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের কথায়, “আমি জানি না ওঁরা দেখা করবেন কি না। হয়তো করবেন, হয়তো বা করবেন না।”