বুধবার থেকেই ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করছে আমেরিকা। নয়াদিল্লির উপর শুল্ক কোপের কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বার এই সংক্রান্ত নির্দেশিকাও তৈরি করে ফেলল ট্রাম্পের প্রশাসন। নির্দেশিকাটি এখনও সরকারি ভাবে প্রকাশ করেনি তারা। তবে নির্দেশিকার খসড়া ইতিমধ্যে আমেরিকার সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ্যে এসেছে। বুধবারই সেটি সরকারি ভাবে ঘোষণা করার কথা। বুধবার সকাল (ভারতীয় সময়) আমেরিকায় রফতানিকৃত এ দেশের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক নেবে ট্রাম্প প্রশাসন।
মার্কিন শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ মারফত ওই নির্দেশিকা তৈরি করেছে ট্রাম্প প্রশাসনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতর। নির্দেশিকা অনুসারে, ২৭ অগস্ট আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় সময়ে (ইস্টার্ন টাইম জ়োন) রাত ১২টা ১মিনিট থেকে শুল্ক কার্যকর হবে। অর্থাৎ, ভারতীয় সময় অনুসারে, বুধবার সকাল ৯টা ৩১ মিনিট থেকে এই অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর করছে মার্কিন প্রশাসন।
নির্দেশিকায় ট্রাম্পের গত ৬ অগস্টের নির্দেশের কথাও বলা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, আমেরিকার প্রতি রাশিয়ার হুমকি মোকাবিলা করতেই ভারতীয় পণ্য আমদানির উপর শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, উল্লেখিত সময়ের পরে আমেরিকার বাজারের জন্য প্রবেশ করা বা গুদাম থেকে বেরোনো ভারতীয় পণ্যের উপর এই শুল্ক কার্যকর হবে।
সাত পাতার ওই নির্দেশিকায় ভারত এবং রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথাও উল্লেখ করেছে মার্কিন প্রশাসন। সেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়া থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তেল কেনে ভারত। সেই কারণেই অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। বস্তুত, আমেরিকার এমন দাবি নতুন কিছু নয়। সাম্প্রতিক অতীতে কখনও ট্রাম্প নিজে, কখনও তাঁর সরকারি আধিকারিক এবং সচিবেরা বার বার এমন দাবি করছেন। বুধবার থেকে অতিরিক্ত শুল্ক কার্যকর হবে, তা-ও আগেই জানিয়ে দিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। এ বার নির্দেশিকা জারি করে তারা জানিয়ে দিল, ভারতীয় পণ্য আমদানির জন্য কখন থেকে ওই শুল্ক নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন:
আমেরিকার এই শুল্ক-হুমকি যে ভারত মেনে নিচ্ছে না, তা ইতিমধ্যে বেশ কয়েক দফায় স্পষ্ট করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। আমেরিকাও যে নিজেদের স্বার্থে রাশিয়া থেকে বিভিন্ন পণ্য কেনে, তা-ও মনে করিয়ে দিয়েছে ভারত। এ অবস্থায় অন্য দেশের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে দেশীয় পণ্যের জন্য পথ আরও প্রশস্ত করার লক্ষ্যে এগোতে শুরু করেছে কেন্দ্র। সোমবার রাতেই গুজরাতের অহমদাবাদের এক সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আবার ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘যতই চাপ আসুক না কেন, আমরা তার মোকাবিলা করার জন্য শক্তিবৃদ্ধি করে যাব। আমরা আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প নিয়েছিলাম। সেই সংকল্পের পথে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। দেশ শক্তিশালী হয়েছে।’’ ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবারই নয়াদিল্লিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছে কেন্দ্রীয় সরকার। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর দফতরে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে। দেশীয় রফতানিকারকদের উপর শুল্কের কী প্রভাব পড়তে পারে, তা পর্যালোচনা করা হতে পারে ওই বৈঠকে।