মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক-জরিমানার হুঁশিয়ারি এবং নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার আবহে এ বার অনমনীয় অবস্থান স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার নিজের রাজ্য গুজরাতে গিয়ে তাঁর ঘোষণা, ‘‘আমাদের উপর চাপ বাড়তে পারে, কিন্তু আমরা তা সহ্য করব।’’
বাড়তি মার্কিন শুল্কের জেরে ভারতীয় অর্থনীতিতে সম্ভাব্য আঘাতের জন্যেও নাম না করে কংগ্রেসকে দুষেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, ‘‘৬০-৬৫ বছর ধরে ভারত শাসনকারী দল ‘আমদানি কেলেঙ্কারি’ করার কারণেই আজ আমাদের দেশ অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।’’ ঘটনাচক্রে, আগামী বুধবার (২৭ অগস্ট) থেকে ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক (২৫ শতাংশ জরিমানা-সহ) বলবৎ করতে চলেছে ট্রাম্প সরকার। তার দু’দিন আগে অহমদাবাদের সভায় সোমবার মোদী বলেন, ‘‘যতই চাপ আসুক না কেন, আমরা তার মোকাবিলা করার জন্য শক্তিবৃদ্ধি করে যাব। আমরা আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্প নিয়েছিলাম। সেই সংকল্পের পথে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। দেশ শক্তিশালী হয়েছে।’’
এখন গোটা বিশ্বে অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের উপর ভিত্তি করে নীতি গঠন হচ্ছে বলেও সোমবার দাবি করেন মোদী। সেই সঙ্গে নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের অগ্রাধিকারও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘মোদীর কাছে কৃষক, গবাদি পশুপালক এবং ক্ষুদ্র শিল্পের স্বার্থ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে কোনও আপস করা হবে না।’’ সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ট্রাম্প সরকার ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপলে প্রায় ৪০০০ কোটি ডলারের (প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা) রফতানি ধাক্কা খাবে।
আরও পড়ুন:
তবে অভ্যন্তরীণ বাজারে কেনাকাটা বাড়ালে সেই ধাক্কা কিছুটা সামাল দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি নতুন লগ্নি টানার রাস্তা খুললেও শুল্ক-অভিঘাত কিছুটা সামলানো যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। অহমদাবাদের সভায় সেই লক্ষ্যেই জনতার কাছে মোদীর আবেদন, ‘‘আমাদের সকলেরই কেবল ‘ভারতে তৈরি পণ্য কেনার মন্ত্র’ অনুসরণ করা উচিত। ব্যবসায়ীদের উচিত তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বাইরে একটি বড় বোর্ড ঝোলানো। যাতে লেখা থাকে যে তাঁরা কেবল স্বদেশী পণ্য বিক্রি করেন।’’