Advertisement
E-Paper

জাপানে ট্রাম্প, হুমকি কিমকে

জাপানের রাজধানীতে পা রেখেই উত্তর কোরিয়ার একচ্ছত্র নেতা কিম জং উনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ টোকিওতে এক দল সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘কোনও একনায়কেরই আমেরিকাকে হাল্কা ভাবে নেওয়া উচিত নয়।’’

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৩১
ফ্রেমবন্দি: মার্কিন সেনাদের মুখোমুখি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়েছেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াও। টোকিওর অদূরে মার্কিন বায়ুসেনা ঘাঁটি ইওকোতায়। রবিবার। ছবি: এ পি।

ফ্রেমবন্দি: মার্কিন সেনাদের মুখোমুখি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়েছেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াও। টোকিওর অদূরে মার্কিন বায়ুসেনা ঘাঁটি ইওকোতায়। রবিবার। ছবি: এ পি।

এশিয়া সফরের শুরুটাই তিনি করলেন শত্রু পক্ষকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে।

জাপানের রাজধানীতে পা রেখেই উত্তর কোরিয়ার একচ্ছত্র নেতা কিম জং উনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ টোকিওতে এক দল সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘কোনও একনায়কেরই আমেরিকাকে হাল্কা ভাবে নেওয়া উচিত নয়।’’ একই সঙ্গে পেন্টাগনও জানিয়ে রেখেছে, পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু ভাণ্ডার ধ্বংস করতে যুদ্ধই একমাত্র পথ।

আরও পড়ুন: সিঁটিয়ে আছে কোরীয় পড়ুয়ারা

কিমের নাম করেই আজ তাঁকে ঠুকেছেন ট্রাম্প। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জাপানে এসে এমনটা যে বলতে পারেন, তা খানিকটা আন্দাজ করেই রেখেছিল পিয়ংইয়ং। তাই পাল্টা সুর চড়িয়ে রেখেছে কিম সরকারও। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থাকে উদ্ধৃত করে সেখানকার এক জনপ্রিয় দৈনিকে লেখা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদি এখনও একের পর এক ঝুঁকিপূর্ণ মন্তব্য করতে থাকেন, তা হলে মার্কিন ভূখণ্ডে ‘পারমাণবিক বিপর্যয়’ কেউ আটকাতে পারবে না।

অন্য দিকে, কিমের দেশের পরমাণু ভাণ্ডার শেষ করতে সে দেশে সেনা নামানোই একমাত্র উপায় বলে মনে করছে পেন্টাগন। যুদ্ধ লাগলে কতটা প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে—সম্প্রতি পেন্টাগনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য। কারণ সে ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রশ্নের উত্তরে পেন্টাগনের ‘জয়েন্ট স্টাফ’-এ ভাইস ডিরেক্টর রিয়ার অ্যাডমিরাল মাইকেল জে ডুমন্ট একটি চিঠি দিয়ে কংগ্রেসকে জানিয়েছেন, শুধু আকাশ হামলায় এই পরমাণু ভাণ্ডার ধ্বংস করা কার্যত অসম্ভব। কিম যে ভাবে উত্তর কোরিয়ার মাটির নীচে সেই অস্ত্র ভাণ্ডার লুকিয়ে রেখেছেন, তা খুঁজে বার করতে স্থল পথে যুদ্ধ ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই বলেই মত ডুমন্টের। আর তার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ভূখণ্ড ব্যবহার করতেই হবে আমেরিকাকে।

দশ দিনের এশিয়া সফরে আজই টোকিওতে পা রেখেছেন সস্ত্রীক ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম এশিয়া সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক অধ্যায় হতে চলেছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। কোরীয় উপদ্বীপে মার্কিন নৌবাহিনীকে সাহায্য করছে জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়া। এই দু’দেশেই সামরিক ঘাঁটি রয়েছে আমেরিকার। টোকিওর কাছে এমনই এক ঘাঁটিতে আজ মার্কিন সেনাদের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। জাপানের পশ্চিম উপকূলে সরাসরি হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছেন কিম। সোলকেও বারবার হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। এই অবস্থায় তিন মিত্র দেশের বন্ধুত্বের ভিত আরও শক্ত করতেই ট্রাম্পের এশিয়া আসা বলে মনে করা হচ্ছে। আজ টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রাম্পকে। দু’জনকে একসঙ্গে গল্‌ফও খেলতে দেখা গিয়েছে। আগামী কাল সরকারি নৈশভোজ। কিন্তু তার আগেই ট্রাম্প-আবের মাখোমাখো সম্পর্ক কিমকে নতুন করে সতর্ক করা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করছেন অনেকে।

জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া ভিয়েতনাম, চিন আর ফিলিপিন্সেও যাওয়ার কথা ট্রাম্পের। আগামী মঙ্গলবার সোলে যাওয়ার কথা ট্রাম্পের। দু’দিন সেখানে থাকবেন তিনি। তবে আজ অবশ্য সেখানেই ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভ দেখিয়েছেন হাজার দু’য়েক মানুষ। পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিনের তিক্ত সম্পর্ক সোলের। কিন্তু ট্রাম্প সেই তিক্ততা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে মনে করেন দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু মানুষ। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় সাড়ে আঠাশ হাজার মার্কিন সেনার বাস। ট্রাম্পের একের পর এক হুমকিতে কিম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন বলে ধারণা কোরিয়াবাসীর। আজকের বিক্ষোভে স্লোগান ছিল, ‘আমরা যুদ্ধের বিরোধী। আমরা শান্তি চাই’। এক বিক্ষোভকারী বললেন, ‘‘নিজেদের রাজনৈতিক মুনাফার জন্য যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছেন ট্রাম্প আর কিম। আর আমরা সাধারণ মানুষ সর্বদা যুদ্ধের ভয়ে কাঁটা হয়ে আছি।’’ সেনায় দু’বছর কাটাতেই হবে, এমন নিয়ম রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এক সেনা সদস্যের মা বললেন, ‘‘ট্রাম্প উত্তর কোরিয়া নিয়ে কিছু বললেই বুক কেঁপে ওঠে।’’

Donald Trump Kim Jong-un North Korea ডোনাল্ড ট্রাম্প কিম জং উন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy