Advertisement
১৮ মে ২০২৪
US

৭১-এর গণহত্যার স্বীকৃতি দাবি করে প্রস্তাব আমেরিকায়

১৯৭১-এর মার্চে স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের দমন করতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে পাকিস্তানি সেনারা। অনুগত রাজাকার বাহিনীর সহায়তায় তারা বাংলাদেশ জুড়ে ভয়ানক হত্যাকাণ্ড চালায়।

শুক্রবার প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়েছে আমেরিকার প্রতিনিধি সভায়।

শুক্রবার প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়েছে আমেরিকার প্রতিনিধি সভায়। ছবি রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২২ ০৮:০৭
Share: Save:

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অব্যবহিত আগে সেখানকার ‘বাঙালি জাতি, প্রধানত হিন্দু ধর্মীয়দের’ উপরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যে ভয়ানক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল, তাকে ‘গণহত্যা’ (জেনোসাইড) হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য একটি প্রস্তাব শুক্রবার উত্থাপিত হয়েছে আমেরিকার প্রতিনিধি সভায়। শাসক ডেমোক্র্যাট পার্টির ভারতীয় বংশোদ্ভূত নেতা রো খন্না এবং বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির স্টিভ সাবো— আমেরিকার প্রতিনিধি সভার দুই প্রভাবশালী সদস্য যৌথ ভাবে এই প্রস্তাবটি এনেছেন। প্রস্তাবে আরও নানা বিষয়ের মধ্যে দাবি করা হয়েছে, ভয়াবহ এই গণহত্যার জন্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে পাকিস্তান সরকারকে।

১৯৭১-এর মার্চে স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের দমন করতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে পাকিস্তানি সেনারা। অনুগত রাজাকার বাহিনীর সহায়তায় তারা বাংলাদেশ জুড়ে ভয়ানক হত্যাকাণ্ড চালায়। বহু লক্ষ মানুষ এই অভিযানে পাক সেনা ও তাদের সহযোগীদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হন। বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠন এই হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ হিসাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দানের লক্ষে সচেষ্ট, যাতে অর্ধ শতাব্দী পরেও খলনায়কদের চিহ্নিত করে আদালতে বিচার করা যায়।

ওহায়োর সদস্য স্টিভ সাবো প্রস্তাবটি পেশ করে টুইটে লিখেছেন, ‘আজকের বাংলাদেশে পাকিস্তানের সেনারা যা ঘটিয়েছিল, তা নাৎসিদের ইহুদি হত্যার মতো গণহত্যাই। বহু লক্ষ মানুষকে তারা হত্যা করেছিল, যাদের প্রায় সকলেই বাঙালি এবং ৮০ শতাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।’ সাবো লিখেছেন, ‘একাত্তরের এই গণহত্যাকে ভুলে যেতে দেওয়া যায় না। নিহতদের স্বজনদের অনুভূতির বিষয়টি বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন। এমন ভয়ঙ্কর অপরাধ যারা করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি দিয়ে এমন ঘটনা আর যাতে না-ঘটে তা নিশ্চিত করতে সবার আগে পাকিস্তানি সেনাদের এই দুষ্কর্মকে গণহত্যা বলে সরকারকে স্বীকৃতি দিতে হবে।’ প্রসঙ্গত, একাত্তরের যুদ্ধে আমেরিকা পাকিস্তানের সমর্থনে অবস্থান নিয়েছিল। গণহত্যাকে আড়াল করতেও সচেষ্ট ছিল তখনকার প্রশাসন।

হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ়-এর এগ্‌জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর প্রিয়া সাহা বলেন, “সে দিন যে কয়েক লক্ষ মানুষকে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারেরা পরিকল্পনামাফিক হত্যা করেছিল, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫১ বছর পরে তাঁরা স্বীকৃতি পাওয়ার পথে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।” বাংলাদেশের নারী নেত্রী ও সাংসদ আরোমা দত্ত বলেন, “আমার দাদু ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত (৮৫) এবং কাকা দিলীপ দত্ত (৪০)-কে ময়নামতী ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে গিয়ে ভয়ঙ্কর অত্যাচার করে খুন করেছিল পাক সেনারা। সে দিন যারা নিরীহ মানুষদের নির্মম ভাবে হত্যা করেছিল, আমি তাদের বিচার ও শাস্তি চাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

US Pakistan Bangaldesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE