রাশিয়ার একের পর এক সমরাস্ত্রের পরীক্ষার মাঝে এ বার আসরে নামল আমেরিকাও। দূরপাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘মিনিটম্যান ৩’ পরীক্ষা করল মার্কিন বায়ুসেনার গ্লোবাল স্ট্রাইক কমান্ড। কয়েক দিন আগেই আমেরিকার যুদ্ধ দফতরকে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পরেই মার্কিন বায়ুসেনার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
বুধবার আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় ভেন্ডেনবার্গের সামরিক ঘাঁটি থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ‘মিনিটম্যান ৩’ ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি। সেটি প্রায় ৬৭৫৯ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকেন্দ্রের নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে বলে দাবি মার্কিন সামরিক বাহিনীর।
গত ২১ অক্টোবর পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম বুরেভেস্টনিক ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষার দাবি করেছিল মস্কো। পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণে ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৪ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছিল। ‘পরমাণু শক্তিচালিত স্বয়ংক্রিয় মনুষ্যবিহীন সাবমার্সিবল যান ‘পোসাইডন’ পরীক্ষায় সফল হয়েছে বলে দাবি করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এ অবস্থায় গত সপ্তাহেই মার্কিন যুদ্ধ দফতরকে অবিলম্বে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা শুরুর করার নির্দেশ দেন ট্রাম্পও। ঘটনাচক্রে, তার পর পরই দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করল আমেরিকা। যদিও মার্কিন বায়ুসেনার দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষার বিষয়ে তারা কয়েক মাস আগেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল। রুশ সংবাদসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স অনুসারে, এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে পেন্টাগন আগাম জানিয়ে দিয়েছিল ক্রেমলিনকেও। রুশ প্রশাসনের প্রেসসচিব দিমিত্রি পেসকভও জানিয়েছেন, এই পরীক্ষার বিষয়ে তাঁরা আগে থেকে জানতেন।
আরও পড়ুন:
বস্তুত, কয়েক দিন আগেই সমাজমাধ্যমে পোস্টে মার্কিন যুদ্ধ দফতরকে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশের কথা জানান ট্রাম্প। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘আমেরিকার কাছে অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় বেশি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।’’ ওই সমাজমাধ্যম পোস্টে তাঁর আরও দাবি, পরমাণু অস্ত্রের মারাত্মক ধ্বংসাত্মক শক্তির কারণে তিনি এগুলিকে ঘৃণা করতেন। কিন্তু তাঁর কাছে কোনও বিকল্প ছিল না বলেই দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্টের। এর কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি। ট্রাম্পের বক্তব্য, বর্তমানে পরমাণু অস্ত্রের শক্তির দিক থেকে আমেরিকার পরই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। তৃতীয় স্থানে রয়েছে চিন। তবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে রাশিয়া এবং চিন— দুই দেশই পরমাণু অস্ত্রের নিরিখে আমেরিকার সমানে সমানে পৌঁছে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ট্রাম্প।