তিনি মনে করেন, ইউক্রেন পুরোটাই রাশিয়ার। এমনটাই জানালেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই সঙ্গে ইউক্রেনের আরও জমি দখল করারও হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন। শুক্রবার পুতিন এই মন্তব্য করার পরেই সরব হয়েছে ইউক্রেন। তারা জানিয়েছে, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি ফেরানোর যে চেষ্টা আমেরিকা করছে, সেই পদক্ষেপের প্রতি পুতিনের ‘ঘৃণা’-ই স্পষ্ট হয় তাঁর এই মন্তব্যে। ইউক্রেনের আরও জমি দখল এবং নাগরিকদের খুন করার দিকেই তাঁর ঝোঁক বেশি।
ইউক্রেনের পাঁচ ভাগের এক ভাগ জমিই এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। ক্রাইমিয়ারও দখল নিয়েছে রাশিয়া। লুহানস্ক অঞ্চলের ৯৯ শতাংশ, ডোনেৎস্ক অঞ্চলের ৭০ শতাংশ, জ়াপোরিঝঝিয়া, খেরসন অঞ্চল, খারকিভের কিছু অংশ, সুমি, ডিনিপ্রপেট্রোভস্ক অঞ্চলও রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে। শুক্রবার সেন্ট পিটার্সবার্গ ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ফোরামে পুতিনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ইউক্রেনে আর কতটা এগোবে রাশিয়া? তার জবাবে তিনি জানান, রুশ এবং ইউক্রেনীয়দের তিনি একই মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘‘সেই সূত্রে ইউক্রেনের পুরোটাই আমাদের।’’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি প্রথম থেকেই পুতিনের এই দাবি খারিজ করে এসেছেন। তিনি বার বার দাবি করেছেন, রুশ এবং ইউক্রেনীয়রা কখনওই এক নন। ক্রাইমিয়া এবং ইউক্রেনের অঞ্চলগুলি নিয়ন্ত্রণ করার যে দাবি রাশিয়া তুলেছে, তাকেও বেআইনি বলে জানিয়েছে কিভ এবং পশ্চিমে তার ‘বন্ধু’ দেশগুলি।
আট বছর ধরে পূর্ব ইউক্রেনে হামলা চালানোর পরে ২০২২ সালে সে দেশের সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষে জড়ায় রাশিয়া। পুতিন শুক্রবার জানিয়েছেন, ইউক্রেনের স্বাধীনতা নিয়ে তিনি কোনও প্রশ্ন তুলতে চান না। কিন্তু ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে ইউক্রেন যখন নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, তখন তারা নিরপেক্ষ থাকার অঙ্গীকার করেছিল। পুতিনের দাবি, ইউক্রেন সেই নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারেনি। মনে করা হচ্ছে, ইউক্রেনের নেটো-তে যোগদান এবং আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’-কেই ইঙ্গিত করেছেন পুতিন। তিনি একটি প্রবচনের প্রসঙ্গও তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এখানে কথিত রয়েছে, যেখানে রুশ সেনার পা পড়ে, সেটাই আমাদের।’’
ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, ‘‘আমেরিকা শান্তি ফেরানোর জন্য যে চেষ্টা করছে, তার প্রতি অবজ্ঞাই প্রকাশ করে পুতিনের এই মন্তব্য।’’ তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, যখন আমেরিকা এবং দুনিয়ার অন্য দেশ হানাহানি বন্ধ করতে চাইছে, তখন রাশিয়া ইউক্রেনের আরও জমি দখল করতে, ইউক্রেনীয়দের খুন করতে উদ্যোগী হয়েছে। জ়েলেনস্কি ভিডিয়োবার্তায় জানিয়েছেন, রাশিয়া আসলে যুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যেতে চায়।