মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনের পণ্যে ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের আর্জি জানিয়ে শনিবারই চিঠি লিখেছেন আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো-র সদস্য দেশগুলিকে। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেজিং থেকে এল জবাব। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই স্লোভানিয়া সফর থেকে ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা সম্বন্ধে ঠিক দু’টি বাক্য খরচ করলেন। তাতেই স্পষ্ট হল বেজিঙের অবস্থান।
চিনের বিদেশমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘চিন কখনও যুদ্ধের পরিকল্পনা করে না, যুদ্ধে যোগদানও করে না। যুদ্ধ কখনও কোনও সমস্যার সমাধান তো করতে পারেই না, বরং বিধিনিষেধ ওই সমস্যাগুলিকে আরও জটিল করে তোলে।’’ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স চিনের মন্ত্রীকে উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:
২০২২ সাল থেকে রাশিয়া এবং ইউরোপের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের কুর্সিতে বসার পর থেকেই সেই যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গেও তিনি বৈঠক করেছেন। এখনও সমস্যার সমাধান হয়নি। রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে ট্রাম্প ভারতের উপরেও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। দাবি, ভারত এত তেল কেনে বলেই সেই টাকায় রাশিয়া যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই যুক্তি বাস্তবে ধোপে টিকছে না। কারণ এখনও পূর্ব ইউরোপে যুদ্ধ থামার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাই এ বার আরও কঠোর পদক্ষেপের পরিকল্পনা করছে আমেরিকা।
রাশিয়ার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি তেল কেনে চিন। ক্রেতা হিসাবে তার পরেই রয়েছে ভারত। তবে নেটো-র সদস্য দেশগুলিও খুব একটা পিছিয়ে নেই। রাশিয়ার তেলের তৃতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ তুরস্ক নেটো-র সদস্য। এ ছাড়া, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়ার মতো নেটো-সদস্যও রাশিয়া থেকে তেল কিনে চলেছে। শনিবার সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প জানান, তিনি নেটো-র সকল সদস্য রাষ্ট্রকে একটি চিঠি লিখেছেন এবং রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধের আর্জি জানিয়েছেন। যদি সকলের সহযোগিতা পান, তবেই রাশিয়ার উপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা যাবে, যা যুদ্ধ বন্ধ করতে সাহায্য করবে। এর পরেই চিনের প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প লেখেন, ‘‘নেটো যদি রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করে এবং চিনের পণ্যের উপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তবেই এই প্রাণঘাতী যুদ্ধ বন্ধ হবে। কারণ রাশিয়ার উপর চিনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। শুল্ক সেই নিয়ন্ত্রণ ভাঙতে পারে।’’ এর কয়েক ঘণ্টা পরেই চিনের বিদেশমন্ত্রী নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন।