বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সাদা বাড়ির সামনে ঝরল রক্ত। বৃহস্পতিবার ভোরে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউস থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে গুলি চলে। আততায়ীর গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আমেরিকার ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্য। ইতিমধ্যেই ওই বন্দুকবাজের পরিচয় প্রকাশ্যে এসেছে। তাঁর নাম রহমানুল্লা লাকানওয়াল। আদতে তিনি আফগানিস্তানের নাগরিক।
আমেরিকার একাধিক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২১ সালে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকায় এসেছিলেন রহমানুল্লা। ওই বছরের ১৫ অগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দখল নিয়েছিল তালিবান। সেই সময় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি রয়েছে, এমন আফগান নাগরিকদের আমেরিকায় নিয়ে আসতে ‘অপারেশন অ্যালাইস ওয়েলকাম’ শুরু করেছিল জো বাইডেনের সরকার। ওই অভিযানে বিমানে চাপিয়ে আফগানিস্তান থেকে প্রায় ২০ হাজার আফগান নাগরিক, মার্কিন কূটনীতিকদের আমেরিকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। সেই সময়ই রহমানুল্লা আমেরিকার মাটিতে পা রাখেন। তার পর থেকে তিনি ওয়াশিংটনের বেলিংহামেই থাকতেন।
আফগানিস্তান থেকে যাঁদের আমেরিকায় ফেরানো হয়েছিল, তাঁদের পরিচয় সংক্রান্ত একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্যে যেতে হয়েছিল। তাঁদের হাতের ছাপ নেওয়া হয়েছিল। তাঁরা অতীতে কী করতেন, অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হয়েছিল। পরিচয় যাচাইয়ের এই কাজ যৌথ ভাবে করেছিল আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এবং মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর। তার পরেও এই ঘটনা কী ভাবে ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এর প্রতিবেদন অনুসারে, বুধবার দুপুর ২টো ১৫ মিনিটে স্থানীয় সময় অনুসারে, ওই আততায়ী হোয়াইট হাউসের কাছে ফারাগাট মেট্রো স্টেশনের কাছে আমেরিকার ন্যাশনাল গার্ডের এক মহিলা রক্ষীর বুকে এবং মাথায় গুলি করেন। তার পরেই আর এক রক্ষীকে গুলি করে সামনে এগোনোর চেষ্টা করেন রহমানুল্লা। তখনই তৃতীয় রক্ষী রহমানুল্লাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন ওই বন্দুকবাজ।
অবশ্য ‘অপারেশন অ্যালাইস ওয়েলকাম’ নিয়ে সেই সময়ও আমেরিকায় বিতর্ক দেখা গিয়েছিল। তাড়াহুড়ো করে প্রচুর মানুষকে আমেরিকায় নিয়ে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তৎকালীন বাইডেন প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছিল, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাকে সাহায্য করেছেন, তালিবানের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, এমন ব্যক্তিদেরই আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।