খাবারের টুকরো ছড়িয়ে এ দিক ও দিক। ভাঙা মূর্তির অংশও রয়েছে। আর রয়েছে কিছু পাথরের খণ্ড। ভাল করে খেয়াল করলে বোঝা যাবে, এগুলো কোনও এক সময় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো। সে সব ঘাঁটতে ঘাঁটতেই হঠাৎ চোখ পড়ে একটা ছোট্ট টুকরোয়। বিজ্ঞানীদের মতে, তা মানুষের তৈরি ‘সব চেয়ে প্রাচীন’ কুঠারের অংশ। জন্মকাল প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কিম্বারলে অঞ্চল। সেখানেই ‘কার্পেন্টার্স গ্যাপ’ বলে একটি জায়গা থেকে সন্ধান পাওয়া যায় এই কুঠারের। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এখানে এসেই অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম ঘাঁটি গাড়ে এ কালের মানুষ। তবে আস্তানাটির খোঁজ মিলেছিল বছর কুড়ি আগেই। কিন্তু ২০১৪ সালে সেখানকার ভাঙা মূর্তি, অস্ত্র ইত্যাদি ঘাঁটতে ঘাঁটতে বিজ্ঞানীদের হঠাৎ দৃষ্টি আকর্ষণ করে কুঠারের এই অংশটি। সম্প্রতি তা ‘অস্ট্রেলিয়ান আর্কিওলজি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
ছোট্ট নখের মতো টুকরোটা। ওটা যে আসলে একটা কুঠারের অংশ, তা প্রথম দেখায় বোঝার কোনও উপায় নেই। তবে টুকরোটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পুরাতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, এটি তৈরি ৪৫ থেকে ৪৯ হাজার বছর আগে। উপাদান, ব্যাসাল্ট অর্থাৎ আগ্নেয় শিলা। এবং অন্য কোনও পাথর দিয়ে এর মাথা ঘষে ঘষে ধারালো করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পুরাতত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপক সু ও’কন্নোর বলেছেন, ‘‘পৃথিবীতে আর কোথাও এই সময়ের কুঠার খুঁজে পাওয়া যায়নি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘জাপানে এ ধরনের কুঠার মিলেছে বটে। তবে তা ৩৫ হাজার বছর আগের। আর অন্যান্য এলাকায় পাওয়া কুঠারগুলি প্রায় সব কটারই বয়স দশ হাজার বছর আগের। যখন থেকে কৃষিকর্মে অভ্যস্ত হয় মানুষ।’’
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার হিসককের অনুমান, অস্ট্রেলীয় মহাদেশে এসে নতুন প্রতিকূলতার মোকাবিলা করতেই বিভিন্ন পন্থা বার করে সে যুগের মানুষ। আর তার-ই ফসল এই কুঠার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy