Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ফাঁসি বন্ধ রাখুক পাকিস্তান, আর্জি বান কি মুনের

জেলে থেকেও বাইরের সঙ্গীদের সঙ্গে দিব্যি যোগাযোগ রাখছে তালিবান বন্দিরা। ও সে প্রক্রিয়া এতটাই সুনিয়ন্ত্রিত যে এ ভাবে পরবর্তী হামলার ছকও কষে ফেলেছে তারা। সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে এই তথ্য মেলায় আরও সতর্ক পাক প্রশাসন। তাদের যুক্তি, এই যোগ ভাঙতেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অপরাধে দোষী সাব্যস্তদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত। যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন।

বান কি মুন।

বান কি মুন।

সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:২৩
Share: Save:

জেলে থেকেও বাইরের সঙ্গীদের সঙ্গে দিব্যি যোগাযোগ রাখছে তালিবান বন্দিরা। ও সে প্রক্রিয়া এতটাই সুনিয়ন্ত্রিত যে এ ভাবে পরবর্তী হামলার ছকও কষে ফেলেছে তারা। সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে এই তথ্য মেলায় আরও সতর্ক পাক প্রশাসন। তাদের যুক্তি, এই যোগ ভাঙতেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অপরাধে দোষী সাব্যস্তদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত। যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন। সম্প্রতি পাক প্রধানমন্ত্রীকে ফোনে তিনি অনুরোধ করেন, মৃত্যুদণ্ডের উপর ফের স্থগিতাদেশ চাপাক পাকিস্তান।

এই আর্জির কথায় অনেকে ভুরু কোঁচকাচ্ছেন। তাদের প্রশ্ন, কোন যুক্তিতে তালিবানি জঙ্গিদের মতো অপরাধীদের বাঁচিয়ে রাখার কথা বলছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব? বিশেষত পেশোয়ারের সেনা স্কুলে যে ভাবে হত্যালীলা চালিয়েছে জঙ্গিরা, তার পর কোনও ভাবেই তাদের রেয়াত করা উচিত নয়। কিন্তু বান কি মুনের যুক্তি, বিশ্বের সব দেশই ধীরে ধীরে মৃত্যুদণ্ড উঠিয়ে দিচ্ছে। এ হেন অবস্থায় তা পাকিস্তানে চালু থাকা কাম্য নয়। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে কথা বলতেই পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ফোন করেছিলেন তিনি। শরিফ তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, আইনের পথেই সব কিছু হবে। উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে বান কি মুনের মতোই পাকিস্তানের মৃত্যুদণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের হাই কমিশনার জেইদ রাদ অল হুসেন। একই দাবি বিশ্বের বেশ কিছু মানবাধিকার সংগঠনেরও।

কিন্তু বর্তমানে এ সবে কান দিতে চায় না পাক প্রশাসন। তাদেরই এক উচ্চপদস্থ আমলা জানান, জেলে থেকেও বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে সক্রিয় যোগাযোগ রাখছে তালিবান বন্দিরা। তাঁর দাবি, এখন স্রেফ কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে জেলে বসেই মোবাইল, নানা ধরনের যন্ত্রপাতি পেয়ে যাচ্ছে বন্দিরা। ফলে যোগাযোগ রাখাটা মোটেও অসুবিধাজনক নয়। ওই আমলার বয়ানে, “এ মুহূর্তে যা অবস্থা তাতে গোয়েন্দা সংস্থার সতর্কতা উপেক্ষা করা মানে আরও বিপর্যয় ডেকে আনা।” পেশোয়ারের সেনা স্কুলে হামলার পর স্বাভাবিক ভাবেই আর কোনও বিপর্যয় চায় না পাক প্রশাসন। তাই দ্রুত ফাঁসির সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটছে না তারা। জারি রয়েছে জঙ্গি দমন অভিযানও।

তার জেরে এ দিন প্রাণ হারিয়েছে ৬০ জঙ্গি। সেনার দাবি, আকাশপথে হামলা ও মাটিতে গুলির লড়াই চালিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে ৬০ জঙ্গিকে খতম করেছে পাক সেনাবাহিনী। তবে তার আগে আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া ওরাকজাই প্রদেশের শিন্দারা ও খাজানা কান্দাও চেকপোস্টে হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেনাও পাল্টা আক্রমণ করে। তাতে প্রাণ যায় ২০ জঙ্গির। আহত আরও ২০। কাল গভীর রাতে দত্তাখেল এলাকায় আকাশপথে হামলা চালিয়ে আরও ৩৯ জঙ্গিকে নিকেশ করে পাক নিরাপত্তাবাহিনী। হতদের মধ্যে দু’জন কম্যান্ডারও রয়েছেন। তা ছাড়া আরও এক গুরুত্বপূর্ণ তালিবান কম্যান্ডারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আবার, আজ বালুচিস্তানের কোয়েত্তায় রেল লাইন থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে। পুুলিশ জানায়, জাফের এক্সপ্রেস ওড়ানোই লক্ষ্য ছিল জঙ্গিদের। তবে পুলিশের তৎপরতায় দুর্ঘটনা এড়ানো গিয়েছে।

অন্য দিকে, এ দিন জাকিউর রহমান লকভির জামিনের আবেদনের বিরোধিতার তোড়জোড় শুরু করেছে পাক প্রশাসন। সরকারি আইনজীবী জানান, লকভির জামিন নিয়ে ইসলামাবাদের সন্ত্রাসদমন আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল, তার প্রতিলিপি এ দিনই হাতে পান তিনি। সেই জামিনের বিরোধিতা করতে তৈরি সরকার। শুধু হাইকোর্টের ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার অপেক্ষা। সরকারি সূত্রে খবর, প্রমাণের অভাব, এফআইআরে অপ্রাসঙ্গিক ধারার সংযোজন ও কানে শোনা তথ্যের ভিত্তিতে লকভিকে অভিযুক্ত করায় চলতি মাসে জামিন পায় ২০০৮-এ মুম্বই হামলার এই অন্যতম চক্রী।

আবার সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন

ভারত-পাক সীমান্তে ফের সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। গত চার দিনে এই নিয়ে চতুর্থ বার সংঘর্ষ বিরতি ভাঙল পাক রেঞ্জার্স। পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাতে জম্মুর এরিনা সাব-সেক্টরে গুলি চালায় পাক সেনা। পাল্টা গুলি ছোড়ে বিএসএফও। রাত দেড়টা অবধি চলে গুলির লড়াই। কাঠুয়ার হিরানগর সেক্টরেও শুক্রবার রাতে পাকিস্তানি সেনা গুলি চালায়। এতে কেউ হতাহত হননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE