Advertisement
E-Paper

সাদা মুখের ভিড় বেশি অস্কারে, বিতর্ক তুঙ্গে

বদলের আশা দেখিয়েছিল ২০১৪। কিন্তু ’১৫তে এসেই ধাক্কা খেল তা। গত বার সেরা ছবির শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গ পরিচালক স্টিভ ম্যাকুইনের ছবি ‘টুয়েলভ ইয়ার্স আ স্লেভ’। এই ছবির জন্য সেরা পার্শ্বঅভিনেত্রীর সম্মানও পেয়েছিলেন কৃষ্ণাঙ্গী লুপিটা নিয়ং। কিন্তু এ বছর মনোনয়ন তালিকা দেখেই হোঁচট খেল দুনিয়া। সেখানে শ্বেতাঙ্গ মুখেরই ভিড়!

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৫৬

বদলের আশা দেখিয়েছিল ২০১৪। কিন্তু ’১৫তে এসেই ধাক্কা খেল তা। গত বার সেরা ছবির শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছিল কৃষ্ণাঙ্গ পরিচালক স্টিভ ম্যাকুইনের ছবি ‘টুয়েলভ ইয়ার্স আ স্লেভ’। এই ছবির জন্য সেরা পার্শ্বঅভিনেত্রীর সম্মানও পেয়েছিলেন কৃষ্ণাঙ্গী লুপিটা নিয়ং। কিন্তু এ বছর মনোনয়ন তালিকা দেখেই হোঁচট খেল দুনিয়া। সেখানে শ্বেতাঙ্গ মুখেরই ভিড়!

‘অস্কার সো হোয়াইট’ সমালোচনার ঝড় সর্বত্র। সেরার লড়াইয়ে ২০ জন অভিনেতা-অভিনেত্রীর মধ্যে সকলেই সাদা চামড়ার। ১৯৯৮ সালের পর থেকে গত সতেরো বছরে এমন নজির নেই।

গত বছর ‘টুয়েলভ ইয়ার্স আ স্লেভ’-এর জন্য প্রথম অস্কারজয়ী পরিচালক হিসেবে ইতিহাস গড়েছিলেন স্টিভ। এ বারেও তেমন আলোচনার শীর্ষে ছিল এভা ডু ভারনে-র ছবি ‘সেলমা’। কেউ কেউ বলেছিলেন স্টিভের পর এ বার এভা। কৃষ্ণাঙ্গী এই পরিচালিকার ছবির প্রেক্ষাপট ১৯৬৫ সাল, আলবামা। কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটাধিকারের দাবিতে সেলমা থেকে মন্টগোমারি পর্যন্ত মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের সুবিশাল বিক্ষোভ মিছিল।

কিন্তু পুরস্কার তো দূর অস্ত্, মনোনয়নেই ছিটকে গেলেন গোল্ডেন গ্লোব মনোনীত এভা। মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের চরিত্রে যাঁকে দেখা গিয়েছে, সেই ডেভিড ওয়েলোয়ো-ও মনোনয়ন পাননি। দৌড় থেকে ছিটকে গিয়ে এভা টুইট করেন, “শুভ জন্মদিন ডক্টর কিং। লড়াই চালিয়ে যাও।”

এ দিকে গত কাল সকালে তালিকা প্রকাশের পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই তাই বিতর্কের ঝড় তুঙ্গে। সেরা ছবি ও গানের বিভাগে অবশ্য সেলমা রয়েছে। এ ছাড়া কালো চামড়ার উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি বলতে, সেরা পরিচালক বিভাগে ‘বার্ডম্যান’ ছবির জন্য মেক্সিকান আলেজান্দ্রো গঞ্জালেস। এই দু’টি মনোনয়ন ছাড়া কোথাও কোনও কালো মুখের দেখা নেই। পরিচালনায় মনোনয়ন পাওয়া অন্য নামগুলো হল রিচার্ড লিঙ্কলেটার (বয়হুড), ওয়েস অ্যান্ডারসন (দ্য গ্র্যান্ড বুদাপেস্ট হোটেল), মর্টেন টিলডাম (দ্য ইমিটেশন গেম) ও বেনেট মিলার (ফক্সক্যাচার)। ‘আমেরিকান স্নাইপার’-এর জন্য এই নিয়ে টানা তিন বার মনোনয়ন পেলেন ব্র্যাডলি কুপার। সবাইকে চমকে দিয়ে সেরা অভিনেত্রীর ক্যাটেগরিতে ‘টু ডেজ, ওয়ান নাইট’ ছবির জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন ম্যারিয়ন কটিলার্ড। যেখানে ফিল্মি-দুনিয়ার প্রত্যাশা ছিল ‘কেক’ কিংবা ‘বিগ আইজ’-এর জন্য জেনিফার অ্যানিস্টনের নামই উঠে আসবে অস্কার তালিকায়। মনোনয়ন তালিকায় জায়গা পায়নি ভারতীয় মুখও। নেই এ আর রহমনের নাম। ‘জল’-এর জন্য মনোনয়ন পায়নি সনু নিগম-বিক্রম ঘোষের জুটিও।

অনেকেরই বক্তব্য, বর্ণ বৈষম্য হয়ে এসেছে দীর্ঘদিন ধরেই। বরাবরই হলিউড শাসন করে এসেছে শ্বেতাঙ্গরা। কিন্তু মনোনয়ন থেকেই এভার এ হেন বিদায় দেখে একাংশের আক্ষেপ, এ বার ‘হোয়াইটওয়াশড’ হয়ে গিয়েছে অস্কার। আর এক দলের মতে, “গত বছর যা ঘটেছিল, তা কালেভদ্রেই ঘটে। এ বছর যা ঘটেছে, তা দুঃখজনক। কিন্তু অপ্রত্যাশিত নয়। অস্কার ভোটারদের ৯৪% যে শ্বেতাঙ্গ।”

#অস্কারসোহোয়াইট দিয়ে টুইটারে তাই ঘুরে বেড়াচ্ছে একের পর এক খোঁচা। এক জন টুইট করেছেন, “১২ বছর দাস হয়ে থেকেছি, গত বছর বোধহয় ওরা লক্ষ করেনি।” কেউ কেউ টুইট করেছেন, “শুধুমাত্র মর্গান ফ্রিম্যানের কণ্ঠস্বর রয়েছে বলে ওরা ‘দ্য লেগো’-কে মনোনীত করল না!”

শুধু বর্ণ নয়, মহিলারাও বৈষম্যের শিকার এ হেন দাবিও উঠেছে। ২০১৩ সালে জিরো ডার্ক থার্টি-র জন্য সেরা পরিচালক মনোনীত হয়েছিলেন ক্যাথরিন বিগলো। সেই শেষ। তার পর থেকে পরিচালক বিভাগে কোনও মহিলার নাম দেখা যায়নি। উল্লেখ্য, এই ক্যাথরিন বিগলো-ই একমাত্র মহিলা পরিচালক যিনি ২০০৮ সালে ‘হার্ট লকার’ ছবির জন্য অস্কার জিতেছিলেন। এ বছর একটা বড় সম্ভাবনা ছিল এভার। ‘আনব্রোকেন’-এর জন্য আলোচনায় ছিলেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলিও। কিন্তু মনোনয়নের গণ্ডিই পেরোতে পারেনি দু’টি ছবির একটিও।

তবে এই সব কিছু ছাপিয়ে অস্কারের রং লেগেছে রাজনীতির মঞ্চে। আসলে দু’জমানা ক্ষমতায় কাটানোর পর ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিদায়বেলা হাজির। সামনের বছরই প্রেসিডেন্ট ভোট। ইতিমধ্যেই মার্কিন রাজনীতিতে শক্তি বাড়াতে শুরু করেছেন রিপাবলিকানরা। শ্বেতাঙ্গপ্রধান বলেই পরিচিত তাঁরা। এই আবহে এক জন টুইট করেছেন, “অস্কার তালিকা দেখে মনে হচ্ছে ২০১৬-র নির্বাচনে রিপালিকানদের উত্থান ঘটছেই!”

oscar hollywood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy