হয়তো এটাই গত শতকের শ্রেষ্ঠ পরিহাস।
না হলে ইহুদি-বিদ্বেষী অ্যাডলফ হিটলার কেনই বা বিয়ে করতে গেলেন ‘ইহুদি-বংশোদ্ভূত’ এফা ব্রাউনকে? এক ব্রিটিশ চ্যানেলের জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের উপস্থাপক মার্ক ইভান্সের ধারণা, হিটলার বোধহয় এ সত্যিটা জানতেন না। যেমন এত দিন পর্যন্ত এফার এই ইতিহাস জানতেন না বিশ্ববাসী। কিন্তু বুধবার ওই অনুষ্ঠানের যে সম্প্রচার হতে চলেছে তাতেই ধরা পড়বে ইহুদি রক্ত ছিল এফার শরীরেও। অন্তত তেমনই দাবি ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
তাঁরা জানিয়েছেন এফার চুলের ডিএনএ গঠনের সঙ্গে ‘আশকেনাজি’ ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষদের ডিএনএ গঠনের মিল পাওয়া গিয়েছে। সম্ভবত এফার মা আশকেনাজি ইহুদিদের বংশধর। কিন্তু উনিশ শতকের গোড়ায় এই আশকেনাজি ইহুদিদের অনেকেই ক্যাথলিক ধর্ম গ্রহণ করেন। এফার পূর্বসূরিরাও হয়তো সেই করেছিলেন। ফলে কালের গর্ভে চাপা পড়ে যায় এফার ইহুদি সংযোগের ইতিহাস। তাঁর পরিবার তো বটেই, এফার পরিবার নিয়ে খোঁজ নেওয়ার সময় ফ্যুয়েরারও এই সত্যির নাগাল পাননি।
তা হলে এখন কী করে তা জানা গেল? আসলে ১৯৪৫ সাল নাগাদ জার্মানির ব্যাভেরিয়ার বাড়ি যেখানে এফা থাকতেন সেখান থেকে তাঁর ব্যবহৃত বহু জিনিস নিজের সংগ্রহে নিয়ে আসেন এক মার্কিন গোয়েন্দা অফিসার। তার মধ্যে ছিল একটি চিরুনিও। সেখানে কয়েকটি চুল লেগেছিল। পরে সে চিরুনি ওই অফিসারের ছেলে বিক্রি করে দেন এক বিশেষজ্ঞ সংগ্রাহকের কাছে। তাঁর কাছ থেকেই সেই চিরুণির খোঁজ পান ওই অনুষ্ঠানের উপস্থাপক। সেখান থেকে চুলের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের কাছে। তবে ওই চুলগুলি এফারই কি না, তা নিশ্চিত করতে ফ্যুয়েরার পত্নীর দুই বংশধরের কাছ থেকে তাঁদের চুলের নমুনা সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু মেলেনি। ফলে ফলাফল নিয়ে এখনও সম্পূর্ণ নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা।
না হলে হয়তো ইতিমধ্যেই শতাব্দীর অন্যতম সেরা অত্যাচারীর পাশাপাশি লোক হাসানোর সেরা চরিত্রের তকমাও পেতেন হিটলার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy