১২ জুন অহমদাবাদে ঘটে যাওয়া বিমান দুর্ঘটনাটি ভারতের অন্যতম ব্যয়বহুল বিমা নিষ্পত্তির ঘটনা হতে চলেছে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিমান দুর্ঘটনার আনুমানিক বিমামূল্য প্রায় ৪৭.৫ কোটি ডলার বা প্রায় ৪,০৮০ কোটি টাকা হতে পারে। জেনারেল ইনশিয়োরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক রামাস্বামী নারায়ণন জানিয়েছেন, এটি সম্ভবত ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিমান বিমা হতে চলেছে। এয়ার ইন্ডিয়ার এই দুর্ঘটনার বিমা পরিষেবা প্রদানকারী বিমা সংস্থাগুলির মধ্যে জেনারেল ইনশিয়োরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া অন্যতম। বিপুল পরিমাণ বিমা দাবির বিষয়টি বিশ্লেষণ করে নারায়ণন জানান, ৪৭.৫ কোটি ডলারের মধ্যে প্রায় ১২.৫ কোটি ডলার বা ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা বিমানের অবস্থা এবং ইঞ্জিনের জন্য দাবি করা হতে পারে। বাকি ৩৫ কোটি ডলার বা ৩ হাজার ১৪ কোটি টাকা যাত্রী বিমা।
বিমা প্রদানকারী সংস্থা প্রথমে বিমানের কাঠামো বা ‘হাল’ বিমার দাবি নিষ্পত্তি করবে। বাদবাকি দাবির নিষ্পত্তি হতে কিছুটা সময় লাগবে বলে মত নারায়ণনের। এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার জন্য মোট বিমার দাবির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। কারণ নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েক জন বিদেশি নাগরিক ছিলেন। সে ক্ষেত্রে, তাঁদের নিজেদের দেশের আইন অনুসারে ক্ষতিপূরণ গণনা করা হবে। বিশ্লেষক সংস্থা ‘গ্লোবালডেটা’র তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে ভারতীয় বিমান শিল্পে মোট যত পরিমাণ বিমার প্রিমিয়াম জমা পড়েছিল, অহমদাবাদের দুর্ঘটনার বিমা দাবির পরিমাণ তার তিন গুণেরও বেশি।
‘গ্লোবালডেটা’র একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের বিমা শিল্পের উপর এই দুর্ঘটনার বিপুল বিমা দাবির প্রভাব তেমন পড়বে না। কারণ বিমা সংস্থাগুলি সাধারণত মোট ঝুঁকির ১০ শতাংশেরও কম বহন করে। বাকি ৯০–৯৫ শতাংশ ঝুঁকি বিশ্বব্যাপী পুনর্বিমাকারীদের কাছে হস্তান্তর করে। অর্থাৎ, এই পুরো অর্থের বোঝা একক কোনও বিমা সংস্থা নয়, বরং আন্তর্জাতিক কয়েকটি পুনর্বিমাকারী সংস্থার কাঁধে চাপবে।
বৃহস্পতিবার, ১২ জুন মাটি ছাড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি। এতে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ২৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ১৯৯৯ সালে উড়ান পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে তৈরি হয় ‘মন্ট্রিল কনভেনশন’। এতে যোগ দেয় ভারতও। তার পর থেকে ওই কনভেনশনে নেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের যাবতীয় বিধিনিষেধ মেনে চলে এ দেশের বিমান পরিষেবা। বিমান দুর্ঘটনায় ভ্রমণ বিমা কী কী ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে, তারও সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। উড়োজাহাজের যাত্রীর মৃত্যু হলে বা শারীরিক ভাবে অক্ষমতা তৈরি হলে এই বিমার আবেদন করা যায়। এ ছাড়া দুর্ঘটনার জেরে চিকিৎসা খরচের জন্যেও সংশ্লিষ্ট বিমার টাকা পেতে পারেন তাঁরা।