Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সব সংস্থাই নয়া কর জমানায় রেটিং-জালে

জিএসটি নিয়ে তৈরি আইনের ১৪৯ ধারাতেই এই রেটিং করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, ‘‘জিএসটি-তে নথিভুক্ত সমস্ত ব্যক্তি বা সংস্থার রেটিং করা হবে। জিএসটি আইনের শর্তগুলি কতটা মেনে চলা হচ্ছে, রেটিং হবে তার উপর ভিত্তি করেই।’’ কোনও কর ব্যবস্থার আওতায় এ ধরনের রেটিং ভারতে এই প্রথম হতে চলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। বর্তমানে আয়কর বা অন্য কোনও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ করের ক্ষেত্রেই এই ধরনের মূল্যায়নের ব্যবস্থা নেই।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০৩:০২
Share: Save:

পণ্য পরিষেবা (জিএসটি) কর ব্যবস্থার আওতায় থাকা সমস্ত সংস্থার মূল্যায়ন বা রেটিং করা হবে। তা করবে জিএসটি দফতর নিজেই। সেই রেটিং যাতে সংশ্লিষ্ট সকলেই জানতে পারেন, ব্যবস্থা করা হবে তারও। এর জেরে জিএসটি-র নিয়ম-কানুন কতটা মানা হচ্ছে, তার ইঙ্গিত মিলবে। পাশাপাশি, ঋণ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে প্রাথমিক আভাস পাওয়া সম্ভব হবে ব্যাঙ্কগুলির পক্ষেও।

জিএসটি নিয়ে তৈরি আইনের ১৪৯ ধারাতেই এই রেটিং করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, ‘‘জিএসটি-তে নথিভুক্ত সমস্ত ব্যক্তি বা সংস্থার রেটিং করা হবে। জিএসটি আইনের শর্তগুলি কতটা মেনে চলা হচ্ছে, রেটিং হবে তার উপর ভিত্তি করেই।’’ কোনও কর ব্যবস্থার আওতায় এ ধরনের রেটিং ভারতে এই প্রথম হতে চলেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। বর্তমানে আয়কর বা অন্য কোনও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ করের ক্ষেত্রেই এই ধরনের মূল্যায়নের ব্যবস্থা নেই।

রেটিংয়ের জন্য বিবেচিত বিষয়গুলি কী হবে? প্রধানত যেগুলি খতিয়ে দেখা হবে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

• নির্দিষ্ট সময়ে করের রিটার্ন জমা দেওয়া হচ্ছে কি না

• নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে করের টাকা জমা পড়ছে কি না

• ব্যবসা সংক্রান্ত হিসাবপত্র সঠিক ভাবে রাখা হচ্ছে কি না

• এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পণ্য পাঠানোর সময়ে ‘ওয়ে বিল’-সহ মালপত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি সঙ্গে রাখা হচ্ছে কি না

• সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ডিলারকে কোনও সময়ে কর ফাঁকি বা অন্য কারণে জরিমানা দিতে হয়েছে কি না

• জিএসটি ছাড়া, ব্যবসার অন্য কোনও ক্ষেত্রেও সংস্থা বা ডিলার যদি বেআইনি কিছু করে, এই রেটিংয়ে
ধরা পড়বে সেটাও।

জিএসটি চালু হলে তার পরিকাঠামো এমন ভাবে তৈরি করা হবে, যাতে আইন না-মানা ও অন্যান্য সমস্যা যখন যেমন ঘটবে, চটজলদি তা রেকর্ড হয়ে যাবে। ফলে অনলাইন ব্যবস্থায় সাম্প্রতিকতম রেটিংও চিহ্নিত হবে সরাসরি।

কিছু দিন বাদে বাদেই এই রেটিংয়ের সাম্প্রতিক অবস্থান জিএসটি সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রয়োজনে তার সংশোধনও করা হবে। উদ্দেশ্য, যাতে ইচ্ছে করলেই যে-কেউ যখন খুশি ওই রেটিং দেখতে পারেন এবং তার পর সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে লেনদেন করা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মূলত ঋণদাতা ব্যাঙ্ক, পণ্য সরবরাহকারীরা এই মূল্যায়নের ফলে উপকৃত হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। অনলাইনে রেটিংয়ে চোখ রেখেই তারা জেনে নিতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি জিএসটি-র শর্ত মানছে, কি না। বিপদ বুঝলে আগেভাগেই সে ক্ষেত্রে তারা সতর্ক হতে পারবে।

জিএসটি বিশেষজ্ঞ এবং বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্সের পরোক্ষ কর সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান তিমিরবরণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আয়কর অথবা অন্য কোনও করের ক্ষেত্রে এই ধরনের রেটিং ব্যবস্থা নেই। কোনও ব্যবসায়িক সংস্থাকে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত হতে এই রেটিং ব্যবস্থা বিশেষ কার্যকর হবে বলে আমার ধারণা। স্বাভাবিক ভাবেই ভাল রেটিং পাওয়া সংস্থার জিএসটি কর্তৃপক্ষের খারাপ নজরে পড়ার সম্ভাবনা কম থাকবে।’’

তিমিরবাবুর মতে, এই ধরনের মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু হলে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা অন্য কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইলে উভয় পক্ষই একে অপরের ব্যাপারে অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য ওই রেটিং একনজরে দেখেই জেনে নিতে পারবেন। তা থেকেই ঋণ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সংস্থা সম্পর্কে একটা প্রথমিক ধারণা করে নেওয়া সম্ভব হবে ব্যাঙ্কগুলির পক্ষেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE