Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
বৈদ্যুতিক দু’তিন চাকায় নীতি-প্রস্তাব

খরচ ও রূপরেখা নিয়েই প্রশ্ন শিল্পের

আগামী ২০২৩ সালের ৩১ মার্চের পরে তিন চাকার যত গাড়ি দেশে বিক্রি হবে তার সবই হোক বৈদ্যুতিক। দু’চাকার ক্ষেত্রে তা ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ— নীতি আয়োগ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলিকে নিয়ে তৈরি আন্তঃ মন্ত্রিগোষ্ঠীর স্টিয়ারিং কমিটি সম্প্রতি এমনই প্রস্তাব করেছে।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত 
শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ০৩:১২
Share: Save:

আগামী ২০২৩ সালের ৩১ মার্চের পরে তিন চাকার যত গাড়ি দেশে বিক্রি হবে তার সবই হোক বৈদ্যুতিক। দু’চাকার ক্ষেত্রে তা ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ— নীতি আয়োগ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলিকে নিয়ে তৈরি আন্তঃ মন্ত্রিগোষ্ঠীর স্টিয়ারিং কমিটি সম্প্রতি এমনই প্রস্তাব করেছে। কিন্তু নির্দিষ্ট রূপরেখা ছাড়া এই বদল কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়ে সংশয়ী গাড়ি শিল্প।

তাদের বক্তব্য, এমনিতে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি ও বিক্রি নিয়ে কোনও আপত্তি নেই। তবে এর জন্য যদি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয় তা হলে যথেষ্ট আগে থেকে তা শিল্পকে জানানো হোক। কারণ, চাহিদা তৈরি করতে হবে। রয়েছে পরিকাঠামো তৈরির খরচও।

ভারতে ২০৩০ সালের মধ্যে শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক গাড়ির চাকা গড়াবে বলে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন কেন্দ্রের একাধিক মন্ত্রী। এ বার দুই ও তিন চাকার বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রেও সময় বেঁধে দেওয়ার দিকে জোর দিল ওই কমিটি। পাশাপাশি একটি সূত্রের বক্তব্য, ২০২৬ সালের মধ্যে অন্তত ৪০% বাণিজ্যিক যাত্রী গাড়িও বৈদ্যুতিক করার ভাবনা রয়েছে সরকারের অন্দরে।

খসড়া প্রস্তাব

দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক গাড়িতে জোর।
ভারতকে দুই ও তিন চাকার বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা।
২০২৩ সালের ৩১ মার্চের পরে তিন চাকায় শুধুই বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি।
২০২৫ সালের ৩১ মার্চের পরে একই ব্যবস্থা দু’চাকায় (১৫০ সিসির কম)।
বৈদ্যুতিক তিন চাকার চাহিদা বাড়াতে ফেম-২ প্রকল্পে ভর্তুকি দ্বিগুণ করার প্রস্তাব।
দূষণ কমাতে ‘কার্বন ক্রেডিট’-এর মতো বিভিন্ন উৎসাহমূলক আর্থিক নীতি।

গাড়ি শিল্পের বক্তব্য, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে নতুন দূষণ বিধি ‘ভারত স্টেজ-৬’ মেনে গাড়ি তৈরি বাধ্যতামূলক। সে জন্য বিপুল লগ্নি করেছে সংস্থাগুলি। এরই মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির জন্যও সময় বেঁধে দেওয়া কতটা বাস্তবোচিত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা। সংস্থাগুলির বক্তব্য, মূলত দু’টি বিষয়ের দিকে তাকিয়ে গাড়ি উৎপাদন করে তারা।

শিল্পের বক্তব্য

বৈদ্যুতিক গাড়ির সম্ভাবনা আছে। কিন্তু এ জন্য নির্দিষ্ট রূপরেখা জরুরি।
২০২০ সাল থেকে বিএস-৬ মাপকাঠি মেনে গাড়ি তৈরির জন্য ৭০-৮০ হাজার কোটি টাকা লগ্নি হচ্ছে।
৩-৫ বছরের মধ্যে ফের বিপুল লগ্নি সহজ নয়।
উপযুক্ত পরিকাঠামো ও পরিকল্পনার অভাবে সেই লগ্নির ঝুঁকি কী ভাবে সম্ভব?

প্রথমত, বাজারের চাহিদা। দ্বিতীয়ত, সরকারের নীতি। কিন্তু ঘটনা হল, দেশের রাস্তায় বৈদ্যুতিক গাড়ি গড়ানোর কথা বলা হলেও চার্জিং স্টেশনের মতো পরিকাঠামো তৈরির দিকে এখনও জোর দেওয়া হয়নি। কিন্তু তা না থাকলে চাহিদা তৈরি করা যাবে কী ভাবে? গাড়ি শিল্পের সংগঠন সিয়ামের ডিজি বিষ্ণু মাথুর বলেন, ‘‘আগে রোডম্যাপ তৈরি হোক।’’ হিরো মোটোকর্পের এক মুখপাত্রের বক্তব্য, তাঁরা বৈদ্যুতিক গাড়ির বিষয়ে কাজ করছেন। তবে দেশ জুড়ে সহজে চার্জ দেওয়ার পরিকাঠামো ও ক্রেতাদের মধ্যে চাহিদা তৈরির বিষয়ে আগে জোর দিতে হবে।

তবে একটি সূত্রের খবর, সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গড়কড়ী সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময় নিয়ে এগনোরই পক্ষে। আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে শিল্পমহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Economy Finance Nitin Gadkari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE