মোদী সরকারের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন। ছবি: রয়টার্স।
ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি মাপার নতুন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন। এক গবেষণায় তিনি দাবি করেছেন, হিসেব কষার পদ্ধতি বদল করার ফলেই ২০১১-১২ থেকে ২০১৬-১৭ সালে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির অঙ্ক এক লাফে অন্তত ২৫০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছে। আসলে জিডিপি বৃদ্ধির অঙ্ক ৪.৫ শতাংশের বেশি নয়। এর প্রেক্ষিতে বুধবার কেন্দ্র জানাল, সুব্রহ্মণ্যন যে যে যুক্তি ও মাপকাঠির উপরে ভিত্তি করে গবেষণাপত্রটি তৈরি করেছেন তার প্রতিটি অংশ ধরে ধরে খণ্ডন করা হবে। ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে বর্তমান মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যনের নেতৃত্বাধীন কমিটি।
প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা নিজের গবেষণাপত্রে জিডিপি হিসেবের পদ্ধতির ‘ভ্রান্তি’ হিসেবে মূলত দু’টি বিষয় তুলে ধরেছেন। প্রথমত, ভিত্তিবর্ষ বদলে ২০১১-১২ করার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়নি। দ্বিতীয়ত, বৃদ্ধির হিসেবের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সুব্রহ্মণ্যন। তাঁর বক্তব্য, ওই একই সময়ে বিভিন্ন দেশের গড় জিডিপি বৃদ্ধির থেকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির অঙ্কের ব্যবধান অনেকটাই বেশি। যা বাস্তবে অসম্ভব।
প্রাক্তনের এই দু’টি যুক্তি বুধবার রীতি মতো বিবৃতি জারি করে খারিজ করেছে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ। তাদের বক্তব্য, পূর্বতন ইউপিএ সরকারের সময়ে ২০০৮ সাল থেকেই ভিত্তিবর্ষ ও হিসেবের পদ্ধতি বদলের বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। মতামত নেওয়া হয়েছে বহু বিশেষজ্ঞের। তা ছাড়া হিসেবের পদ্ধতির সমালোচনা করতে গিয়ে যে যুক্তি সুব্রহ্মণ্যন তুলে ধরেছেন, তা-ও ঠিক নয় বলে মনে করছে কেন্দ্র। কারও কারও বক্তব্য, ওই পদ্ধতিতে আদৌ জিডিপির হিসেব কষা হয় না। আবার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির ফলেও যে জাতীয় আয় বাড়তে পারে, গবেষণায় সেই বিষয়টিও এড়িয়ে গিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা।
কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, সুব্রহ্মণ্যনের যুক্তি খারিজের চেষ্টা করলেও কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত এটা স্পষ্ট করে বলেনি যে, ভারতের বর্তমান বৃদ্ধির অঙ্কই প্রমাণিত সত্য। তবে উল্টো মতও আছে। অনেকের বক্তব্য, ভারতের বৃদ্ধি হিসেবের পদ্ধতি রাষ্ট্রপুঞ্জ স্বীকৃত। বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা নিজেরা যে বৃদ্ধি হিসেব করে তা-ও কেন্দ্রের বৃদ্ধির অঙ্কের কাছাকাছিই থাকে। অতীতে তা নিয়ে বিতর্ক হয়নি।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy