সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে দেশের মানুষের আয়। স্বাচ্ছন্দ্যের চাহিদা। যার প্রভাব পড়েছে তাঁদের খাদ্যাভ্যাসে। সমীক্ষা বলছে, এর হাত ধরে ভারতে মাছ খাওয়া মাথা পিছু হারে বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। ২০০৫ সালের ৪.৯ কেজির তুলনায় তা ২০২১ সালে দাঁড়িয়েছে ৮.৮৯ কেজি। সামগ্রিক ভাবে বৃদ্ধির হার ৮১.৪৩%। বছরের হিসাবে ধরলে ৪.০৫%। আর সেই চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিতে এই সময়ে মাছ উৎপাদনও বেড়েছে দ্বিগুণ। পৌঁছেছে ১.৪২ কোটি টনে।
আন্তর্জাতিক খাদ্য নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএফপিআরআই, ওয়ার্ল্ডফিশ এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচার রিসার্চ (আইসিএআর) এবং অন্যান্য সরকারি দফতর এই সমীক্ষা চালিয়েছিল। সময়কাল ছিল ২০০৫-২০২১। সেই ‘ফিশ কনজ়াম্পশন ইন ইন্ডিয়া: প্যাটার্নস অ্যান্ড ট্রেন্ডস’ রিপোর্ট জানাচ্ছে, বিশ্ব ব্যাঙ্কের হিসাবে মধ্য ও স্বল্প আয়ের দেশগুলিতে মাছের গড় চাহিদা যেখানে ৪৫ হারে বেড়েছে, ভারতে তা ৬০%। তবে এখনও ওই সমস্ত দেশে মাথা পিছু গড়ে ১৪.৯৪ কেজির তুলনায় এখানে মাছ খাওয়ার অভ্যাস অনেকটাই কম।
এ দিকে, সারা বিশ্বেও জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তার তুলনায় মাছ খাওয়ার প্রচলন বেড়েছে বলে জানিয়েছে এই সমীক্ষা। আর এর কারণ হিসেবে সেখানে তুলে ধরা হয়েছে মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়া, স্বাস্থ্য সম্পর্কে তাঁদের মধ্যে সচেতনতা বাড়া এবং শহরাঞ্চলের প্রসারকে। আইসিএআর-এর ডিরেক্টর জেনারাল হিমাংশু পাঠকের জানিয়েছেন, দেশে মাছের চাহিদা বৃদ্ধির হাত ধরে বিশ্বের নিরিখে তৃতীয় বৃহত্তম ভারত। তবে মাথা পিছু চাহিদার হিসাবের নিরিখে এখনও তা বেশ কম। বরং রিপোর্ট বলছে, সেই ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে ডিম ৭.৩৫ শতাংশ বিন্দু। মাছ রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে, ৬.১ শতাংশ বিন্দু। আর মুরগী বা অন্য মাংসের ক্ষেত্রে ওই হার ৫.৪৫ শতাংশ বিন্দু।
শহরে মাছ বেশি খাওয়া হলেও, চাহিদা বৃদ্ধির নিরিখে গ্রাম তাকে পিছনে ফেলেছে বলেও উঠে এসেছে রিপোর্টে। যা বলছে, বছরে ৪.০৫% বৃদ্ধি দরে হিসাব করলে সব মিলিয়ে ২০২৯-৩০ সালে গিয়ে ভারতে মাছ খাওয়া পৌঁছতে পারে বছরে মাথা পিছু ১৯.৮ কেজিতে। ২০৩৯-৪০ সালে ৩১.৭ কেজি এবং স্বাধীনতার শতবর্ষে ২০৪৭-৪৮ সালে তা হতে পারে ৪১.২৯ কেজি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)