সুদের হার কমিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা আরবিআই। ফলে গাড়ি ও বাড়ি-সহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে কমবে মাসিক কিস্তির অঙ্ক। কিন্তু অন্যদিকে স্থায়ী আমানতের (ফিক্সড ডিপোজ়িট বা এফডি) উপর সুদের হার কমার রয়েছে প্রবল আশঙ্কা। সে ক্ষেত্রে আর্থিক দিক থেকে লোকসানের মুখ দেখতে হবে গ্রাহকদের।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি সুদের হার বা রেপো রেট কমানোর কথা ঘোষণা করেন আরবিআইয়ের গভর্নর সঞ্জয় মলহোত্র। কিন্তু তার পর দু’দিন কেটে গেলেও এফডির ক্ষেত্রে সুদের হার হ্রাস করেনি কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত বা বেসরকারি ব্যাঙ্ক। আর তাই সেই ঘোষণা আসার আগেই স্থায়ী আমানতে লগ্নির পরামর্শ দিয়েছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
বেশ কিছু দিন আগে এফডির ক্ষেত্রে সুদের হার সংশোধন করে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি), কর্ণাটক ব্যাঙ্ক, ফেডারেল ব্যাঙ্ক, অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক এবং শিবালিক স্মল ফিন্যান্স ব্যাঙ্ক। আরবিআই রেপো রেট হ্রাস করলেও এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির স্থায়ী আমানতের ক্ষেত্রে সুদের হার বদল করার সম্ভাবনা কম, মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
গত ৫ থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের মুদ্রানীতি কমিটির বৈঠক। সেখানেই সর্বসম্মতিতে রেপো রেট কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর মলহোত্র। উল্লেখ্য, প্রায় পাঁচ বছর পর সুদের হার হ্রাস করল আরবিআই।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কটি রেপো রেট কমিয়েছে ২৫ বেসিস পয়েন্ট। ফলে সুদের হার ৬.৫ শতাংশ থেকে ৬.২৫ শতাংশে নেমে এসেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলিকে যে সুদের হারে আরবিআই ঋণ দিয়ে থাকে অর্থনীতির পরিভাষায় তাকেই বলে রেপো রেট।
আরবিআইয়ের ওই সুদের সঙ্গে ব্যাঙ্কের থেকে নেওয়া গাড়ি ও বাড়ি-সহ অন্যান্য ঋণগুলি সম্পৃক্ত। আর তাই কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রেপো রেট কমালেই হ্রাস পায় আমজনতার ঋণের মাসিক কিস্তি। স্থায়ী আমানতের সঙ্গে এটি সরাসরি জড়িত নয়। তবে রেপো রেট নিম্নমুখী হলে সাধারণত ব্যাঙ্কগুলি এফডিতে সুদের হার কমিয়ে থাকে।
উদাহরণ হিসাবে ২০২১ সালের কথা বলা যেতে পারে। সে বছর কোভিড অতিমারীর পর রেপো রেট বাড়িয়েছিল আরবিআই। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ওই ঘোষণার কিছু দিনের মধ্যেই এফডিতে সুদের হার বৃদ্ধি করেছিল অধিকাংশ রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি ব্যাঙ্ক।