Advertisement
E-Paper

কালো টাকা সাদায় দেদার গয়না নোটে

এটিএমে নগদের আকাল ও তার চাহিদা হঠাৎ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে আয়কর দফতরকে মাঠে নামিয়েছে কেন্দ্র।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৭
বিকিকিনি: অক্ষয় তৃতীয়ায় চলছে গয়না কেনা। বুধবার অমদাবাদে। ছবি: পিটিআই।

বিকিকিনি: অক্ষয় তৃতীয়ায় চলছে গয়না কেনা। বুধবার অমদাবাদে। ছবি: পিটিআই।

কালো টাকা সাদা করতে দেদার নগদে গয়না কেনা চলছে। দেশের একটা বড় অংশে নগদের অভাবের পিছনে তা অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন আয়কর দফতরের কর্তাদের একাংশ।

এটিএমে নগদের আকাল ও তার চাহিদা হঠাৎ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণ খুঁজতে আয়কর দফতরকে মাঠে নামিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এখনই তাঁরা নগদে গয়না কেনার দিকে সন্দেহের আঙুল তুলে সরকারি ভাবে মুখ খুলতে নারাজ। কারণ তা হলে কালো টাকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে মোদী সরকারের ডিগবাজি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।

কী সেই ডিগবাজি?

নোট বাতিলের পরে কালো টাকার রমরমা বন্ধ করতে ২০১৭ সালের অগস্টে কেন্দ্র নিয়ম করেছিল, ৫০ হাজার টাকার উপরে গয়না কেনায় প্যান কার্ডের নম্বর দিতে হবে। দোকানের মালিককে তা জানাতে হবে ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে। এর পরেই অলঙ্কার শিল্পে ধস নামে। বড় অঙ্কের কেনাকাটা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। গুজরাত, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্য থেকে চাপ আসতে শুরু করে। চাপের মুখে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে, অক্টোবরের শুরুতেই নির্দেশিকা তুলে নেয় কেন্দ্র। ফলে ৫০ হাজার টাকার বেশি মূল্যের গয়না কিনতে গিয়ে আয়কর দফতরের আতস কাচের নীচে আসার ভয় কেটে যায়। বাড়তে শুরু করে কেনাকাটাও।

যার প্রমাণ হল, রফতানি মার খেলেও দেশের বাজারে রত্নালঙ্কারের চাহিদা হু হু করে বেড়েছে। ২০১৭-র এপ্রিল থেকে ২০১৮-র ফেব্রুয়ারিতে দেশে ৬,৭৫১ কোটি ডলারের সোনা, রুপো, না-কাটা হিরে, রত্ন, অলঙ্কার আমদানি হয়েছে। তার আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ৪,৬২৮ কোটি।

ডিগবাজি

• ৫০ হাজার টাকার বেশি গয়না কেনাকাটায় বাধ্যতামূলক প্যান দাখিলের নিয়ম চালু ২০১৭-র অগস্টে

• নিয়ম বাতিল অক্টোবরের গোড়াতেই

ফল

• নগদে ঢালাও গয়না
কেনাকাটা শুরু

• অক্ষয় তৃতীয়ার বাজারও গরম

• ২৫% বাড়তি ব্যবসার ইঙ্গিত

সন্দেহ

• গয়নার এত বেশি চাহিদা কালো টাকা সাদা করার তাগিদে

• নগদ সঙ্কটও বাড়িয়ে দিচ্ছে ঢালাও গয়না কেনা

বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার বাজারেও বিপুল সোনার গয়না বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি-র মহাসচিব প্রবীণ খণ্ডেলওয়াল বলেন, ‘‘আমাদের অনুমান, বুধবার অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে ২৫% অতিরিক্ত ব্যবসা হয়েছে।’’ জুয়েলার্স ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার জাতীয় আহ্বায়ক পঙ্কজ অরোরার হিসেব, ‘‘গড়ে প্রতিদিন ১,৪০০ কোটি টাকার সোনার গয়না বিক্রি হয়। সেখানে বুধবারে প্রায় ২,০০০ কোটি হবে বলে অনুমান।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন সোনা কেনাকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। তা ছাড়া মানুষ এখনও সোনায় লগ্নি করতে নিশ্চিন্ত বোধ করেন। এর উপরে ভবিষ্যতে সোনার দাম বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়েই বিক্রি বেড়েছে।

আয়কর দফতরের কর্তাদের মতে, এর বেশির ভাগ কেনাকাটাই হচ্ছে নগদে। সে ভাবেই কালো টাকা সাদা হচ্ছে। নগদের এই অস্বাভাবিক চাহিদা এটিএমে নোটের আকালের পিছনে কারণ হতে পারে। আয়কর আইন অনুযায়ী, ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদে গয়না কেনায় তথ্য দিতে হয় না। দিল্লির করোল বাগের কিছু অলঙ্কার ব্যবসায়ী বলছেন, ২ লক্ষ টাকার বেশি গয়না কেনাকাটা হলে তাঁরা ভেঙে ভেঙে ছোট অঙ্কের একাধিক বিল তৈরি করে দিচ্ছেন।

ATM Cash Black money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy