Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
আর্থিক ফলে নজর বাজারের

এখনই বড় পতনের আশঙ্কা নেই

বাজারের এই ঊর্ধ্বগতি পড়তি সুদের জমানায় আরও বেশি মানুষকে আকর্ষণ করছে শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করতে। অর্থবর্ষের প্রথম আট মাসে মোট ৯৫ লক্ষ মানুষ যোগ দিয়েছেন ফান্ডে।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৫৫
Share: Save:

এ বার বড়দিনের আমেজটাই আলাদা। শুক্রবারই সেনসেক্স ও নিফটি দুই-ই পৌঁছেছে নতুন উচ্চতায়। সান্টা এ বার উজাড় করে উপহার দিয়েছে ছোট-বড় সব লগ্নিকারীকে। বাজার সর্বকালীন উচ্চতায় ওঠার সুবাদে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে ইক্যুইটি-নির্ভর ফান্ডগুলিও।

বাজারের এই ঊর্ধ্বগতি পড়তি সুদের জমানায় আরও বেশি মানুষকে আকর্ষণ করছে শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করতে। অর্থবর্ষের প্রথম আট মাসে মোট ৯৫ লক্ষ মানুষ যোগ দিয়েছেন ফান্ডে। ফলে নভেম্বরে মোট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৬.৫ কোটিতে। প্রথম আট মাসে ফান্ডে লগ্নি এসেছে ৩.৮ লক্ষ কোটি টাকা। এই সময়ে ইকুইটি এবং ইএলএসএস ফান্ডে লগ্নি ১.২ লক্ষ কোটি। শুক্রবার পর্যন্ত বিএসই-তে নথিবদ্ধ লগ্নিকারীর সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে প্রায় ৩.৭১ কোটি। বাজার এতটা ফুলে-ফেঁপে ওঠায় বিএসই-তে নথিবদ্ধ সব শেয়ারের মোট মূল্য (মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন) প্রথম বার অতিক্রম করেছে ১৫০ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ বড়দিনের মুখে ভাল বেড়েছে লগ্নিকারীদের সম্পদ।

সাময়িক সংশোধনের পরে বাজার বাড়ছিল আগে থেকেই। আগুনে ঘি ঢালে গুজরাত ও হিমাচলে ভোটের ফল। মোদীর হাত শক্ত হওয়ায় বাজার এখনই বড় পতনের আশঙ্কা করছে না। বরং তৃতীয় ত্রৈমাসিকের ফলে উন্নতি হলে সূচক আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই উৎসবের মরসুমে বেশ কিছু মানুষের মনে কিন্তু দুশ্চিন্তা ব্যাঙ্কে রাখা টাকার সুরক্ষা নিয়ে। তবে পরিস্থিতি যা, তাতে বলা যায় এ নিয়ে এতটা আতঙ্কিত হওয়ার তেমন কারণ নেই। তীব্র প্রতিবাদের মুখে বিতর্কিত ‘এফআরডিআই’ বিল সংসদে পেশ করার ব্যাপারে পিছু হটেছে সরকার। দিয়েছে আমানতকারীদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতিও। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোট। এই সময়ে তারা সম্ভবত এমন কোনও পথে হাঁটবে
না, যা ভোট ব্যাঙ্কে বড় ফাটল ধরায়।

অন্য দিকে ব্যাঙ্কগুলির স্বাস্থ্য উদ্ধারে দেউলিয়া আইন প্রয়োগ করে যথাসাধ্য চেষ্টা চলছে অনাদায়ী ঋণ উদ্ধার করার। মূলধনকে মজবুত করার তাগিদে বড় ব্যাঙ্কগুলি বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে। প্রস্তাব আছে, রুগ্ণ ছোট ব্যাঙ্কগুলিকে বড় ব্যাঙ্কের সঙ্গে মেশানোর। এ নিয়ে তেমন আতঙ্কিত হওয়ার কারণ ঘটেনি। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে হবে সবাইকে।

মেগা রাইট ইস্যু বাজারে আনার পথে এগোচ্ছে বৃহত্তম বেসরকারি ইস্পাত সংস্থা টাটা স্টিল। ইস্যুর আকার ছুঁতে পারে ১২,৮০০ কোটি টাকা। ইস্পাত উৎপাদন ক্ষমতা ৫০ লক্ষ টন বাড়াতে খরচ করা হতে পারে এই অর্থ। সম্প্রতি কিছুটা উন্নতি লক্ষ করা যাচ্ছে ইস্পাত শিল্পে। টাটা স্টিলের শেয়ার দর উঠে এসেছে ৭০০ টাকার আশেপাশে। বাড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত স্টিল অথরিটি-র শেয়ার দরও।

সেনসেক্স ৩৩,৯৪০ (+ ১৮৪)

নিফ্‌টি ১০,৪৯৩ (+ ৫২.৭০)

সব শেয়ারের মোট মূল্য ১৫০.৬৭*

লগ্নিকারীর সংখ্যা ৩,৭০,৭৩,৫৪৮

সেনসেক্সের অন্তর্গত ৩০টি শেয়ারে কিছু রদবদল করা হয়েছে ১৮ ডিসেম্বর থেকে। সেনসেক্স থেকে বেরিয়েছে দুই ওষুধ সংস্থা সিপ্‌লা ও লুপিন। সেই জায়গায় এল দুই বেসরকারি ব্যাঙ্ক ইন্ডাসইন্ড ও ইয়েস ব্যাঙ্ক। ফলে মুম্বই সূচকে ব্যাঙ্ক ও অর্থসংস্থার ওজন দাঁড়াল ৪০.১০%। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যাঙ্কের ভাগ ২৮.১০% ও সরকারি ব্যাঙ্কের মাত্র ৩.৬০%। সেনসেক্সে তথ্যপ্রযুক্তি শেয়ারগুলির প্রতিনিধিত্ব ১১.৩০%। তেল-গ্যাস ও গাড়ি সংস্থার যথাক্রমে ১০.৯০ ও ১১.১০%। অনুমান, চলতি ২০১৭-’১৮ ও আগামী ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষের শেষে সেনসেক্সের দাম ও আয়ের (পি-ই) অনুপাত দাঁড়াতে পারে ২২ এবং ১৮ শতাংশের আশেপাশে। এই হিসেব অনুযায়ী বাজার যে-অত্যধিক উঁচু জায়গায় উঠে আছে, তা কিন্তু বলা যাবে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE