তেল, সাবান, শ্যাম্পু বা চা-কফি-বিস্কুটের মতো দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে বাড়ি, গাড়ি, টিভি, ফ্রিজ়— ঢিমে প্রায় সব বাজারই। —প্রতীকী চিত্র।
কোনওটা শখের জিনিস, কোনওটা ছাড়া দিন কাটে না বহু মানুষের। কিছু কিছু আবার অতি প্রয়োজনীয়। কিন্তু বহু দিন হল সব কিছু একাধারে মিশে গিয়েছে চাহিদার খরায়। তেল, সাবান, শ্যাম্পু বা চা-কফি-বিস্কুটের মতো দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে বাড়ি, গাড়ি, টিভি, ফ্রিজ়— ঢিমে প্রায় সব বাজারই। কান পাতলে একটাই কথা শোনা গিয়েছে, চড়া মূল্যবৃদ্ধির জেরে আমজনতার হাতে টাকা নিয়ে। যতটুকু না কিনলেই নয়, ততটুকুতেই থামতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এই চাহিদার এই ঝিমুনি কাটানোরই ব্যবস্থা করা হয়েছে সিংহভাগ মানুষের হাতে পুঁজি থাকার ব্যবস্থা করে।
অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘অর্থমন্ত্রী করে সুরাহা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেকগুলির সমস্যা সমাধানের পথ খুলে দিলেন। মানুষের হাতে অতিরিক্ত টাকা থাকায় তা স্বাভাবিক ভাবেই খরচ করবেন তাঁরা। এর ফলে ভোগ্যপণ্য গাড়ি, বাড়ি-সহ সব কিছুরই চাহিদা বাড়বে। আর চাহিদা বাড়লে স্বাভাবিক ভাবেই উৎপাদন বাড়াতে হবে সংস্থাগুলিকে।’’
গত দু-তিনটি ত্রৈমাসিকে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলির হাল খুবই খারাপ। সাধ্যের আবাসন কিংবা ছোট গাড়ির বিক্রি ক্রমশই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। সেই হাল ফেরাতে এ বারের বাজেটে বন্ধ হয়ে থাকা সাধ্যের আবাসন প্রকল্প ফের চালুর জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার প্রশংসা করেছে সংশ্লিষ্ট মহল। নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি বোমান ইরানি এই প্যাকেজের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘এর ফলে সাধ্যের আবাসন ক্ষেত্র অনেকাংশে উপকৃত হবে।’’ ক্রেডাই ওয়েস্ট বেঙ্গল চ্যাপ্টারের সভাপতি সুশীল মোহতাও জানান, এই বিশেষ প্যাকেজের ফলে আটকে থাকা প্রকল্প অনেক দ্রুত গতিতে শেষ হবে। তাতে আখেরে লাভ হবে সাধ্যের আবাসনের। এতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শহরের একাধিক প্রকল্প গতি পাবে। একই বারংতা, বেসিক হোম লোনের অতুল মোঙ্গার।
অজিতাভর কথায়, ‘‘১২ লক্ষ টাকা আয়ের একজন ব্যক্তির মাসে ৮৫০০ টাকার মতো সাশ্রয় হবে। এই টাকা দিয়ে দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্য যেমন তিনি কিনতে পারবেন, তেমনই দু’চাকা বা চার চাকার ছোট গাড়ির মাসিক কিস্তিও দেওয়া সম্ভব। ফলে করের সুরাহার প্রভাবে এ সব জিনিসের চাহিদা অনেকটাই বাড়বে।’’ যদিও এই দাবির সবটা মানতে চাননি মার্চেন্টস চেম্বারের অর্থনীতি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান স্মরজিৎ মিত্র। তাঁর কথায় ‘‘এই বাজেট গিমিক। বছরে এক লক্ষ টাকা সাশ্রয় করলে গাড়ি বা বাড়ি কেনা মোটেই সম্ভব নয়। তবে তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, এই টাকা হাতে আসায় দৈনন্দিন ব্যবহারের পণ্যের চহিদা বেশ খানিকটা বাড়বে। ফলে কয়েকদিন বাদে এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে।’’
রিটেল চেন স্পেনসার্সের কর্তা তথা সিআইআই পূর্বাঞ্চলের ডেপুটি চেয়ারম্যান শাশ্বত গোয়েন্কা এই বাজেটকে ভবিষ্যতের বাজেট বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘করছাড়ের সীমা বৃদ্ধির ফলে মানুষের হাতে টাকা বাড়বে। ফলে ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। তাতে আখেরে সংস্থাগুলিরই লাভ হবে।’’ তিনিও আশাবাদী, দেরিতে হলেও মানুষের হাতে টাকা জোগানোর এই সিদ্ধান্ত সামগ্রিক ভাবে অর্থনীতির ভিত্তিকেই চাঙ্গা করবে। গোদরেজ কনজিউমার্সের সিএফও আসিফ মালবারি বলেন, ‘‘গ্রামীণ পরিকাঠামো, উৎপাদন এবং ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির পথ খুলে অর্থনীতিকে নতুন গতি দেওয়ার কথাই বাজেটে বলা হয়েছে। কর ছাড়া মানুষের আয় বা হাতে থাকা বাড়তি পুঁজি বৃদ্ধির প্রভাব বিভিন্ন ক্ষেত্রেই পড়বে।’’ অম্বুজা নেওটিয়া গোষ্ঠীর প্রধান হর্ষবর্ধন নেওটিয়া বলেন, বৃদ্ধিমুখী বাজেট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy