E-Paper

বাণিজ্যমন্ত্রীর পর এ বার সওয়াল খোদ অর্থমন্ত্রীর! ব্যাঙ্কের ঋণে সুদের হার কমাতে চাপ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র

সোমবার স্টেট ব্যাঙ্কের বার্ষিক সম্মেলনের মঞ্চ থেকে নির্মলা স্পষ্ট জানিয়েছেন, বহু মানুষ চড়া সুদ মেটাতে গিয়ে অত্যন্ত চাপের মুখে পড়েছেন এবং ব্যাঙ্কের কাছে তার হার সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসার আর্জি জানাচ্ছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:০৬
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।

ফের ঋণে সুদ কমানোর বার্তা এল। এ বার খোদ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছ থেকে। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল সুদের হার ছাঁটার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। এমনকি খাদ্যপণ্যের আগুন দাম যে সেই পথে নতুন করে কাঁটা বিছিয়েছে, সেই তত্ত্বও নস্যাৎ করেন।

সোমবার স্টেট ব্যাঙ্কের বার্ষিক সম্মেলনের মঞ্চ থেকে নির্মলা স্পষ্ট জানিয়েছেন, বহু মানুষ চড়া সুদ মেটাতে গিয়ে অত্যন্ত চাপের মুখে পড়েছেন এবং ব্যাঙ্কের কাছে তার হার সাধ্যের মধ্যে নিয়ে আসার আর্জি জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতে শিল্পের সম্প্রসারণও দরকার। সে জন্য নতুন কারখানা তৈরিতে লগ্নি জরুরি। একমাত্র কম খরচে ধার করার সুবিধার হাত ধরে সেটা হওয়া সম্ভব। যা সরকারের ‘বিকশিত ভারতের’ লক্ষ্য পূরণেও সাহায্য করবে। অর্থমন্ত্রীর দাবি, ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি করে তোলার জন্য দেশের সমস্ত ব্যাঙ্ককে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে। এর জন্যও শিল্প যাতে কম সুদে ঋণ পায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে।

এ দিন নির্মলার জোরালো বার্তা, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির খাতিরে এই মুহূর্তে সুদের হার ছাঁটাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। কারণ, বিভিন্ন মহল থেকেই ঋণের চড়া খরচ গুনতে গিয়ে সমস্যায় পড়ার অভিযোগ উঠছে।

সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অর্থমন্ত্রীর এ দিনের বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ। তারা মনে করিয়ে দিচ্ছে, গত সপ্তাহে বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালও সুদ কমানোর পক্ষে প্রবল সওয়াল করেছিলেন। বলেছিলেন, দেশের আর্থিক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করার জন্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অবশ্যই সুদ কমানো উচিত। এমনকি এই সওয়াল করতে গিয়ে খাদ্যপণ্যের আগুন দামকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনকেও উড়িয়ে দেন তিনি। গোটা দেশকে কার্যত চমকে দিয়ে সুদ কমানোর ক্ষেত্রে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দেওয়ার তত্ত্বকে ত্রুটিপূর্ণ তকমা দেন। তাঁর মন্তব্যকে তৎক্ষণাৎ ‘অসংবেদনশীল’ বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা।

নির্মলা অবশ্য মূল্যবৃদ্ধির হিসাবে খাদ্যপণ্যকে রাখা উচিত কি না, সেই বিতর্ককে কৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, অর্থমন্ত্রীর ইঙ্গিত প্রণিধান যোগ্য। যেখানে তিনি বলেছেন, এই মুহূর্তে তিনটি বা চারটি পচনশীল পণ্য (খাদ্য) খুচরো মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে তুলছে। কিন্তু খাদ্য ও জ্বালানি বাদে বাকি জিনিসগুলির ক্ষেত্রে তা নিয়ন্ত্রণে, তিন বা চার শতাংশে। খাদ্যপণ্যের দাম মূল্যসূচকের হিসাবে থাকা উচিত কি না, সেই প্রশ্নে নির্মলা বল ঠেলে দিয়েছেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির কোর্টেই।

যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, খুচরো বাজারের মাথা তোলা মূল্যবৃদ্ধি এবং চড়া সুদ সাধারণ মানুষের হতাশা ও ক্ষোভ বাড়ানোর পাশাপাশি অস্বস্তি বাড়াচ্ছে মোদী সরকারেরও। তাই জন্য যেনতেনপ্রকারে সুদ কমানোর বন্দোবস্ত করে সকলকে স্বস্তি দিতে মরিয়া তারা। প্রচ্ছন্ন ভাবে সেই বার্তাই দেওয়া হচ্ছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ককে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Banking Sector Central Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy