উঁচু আয়ের রাজ্যগুলিতে দেশের ২৬% মানুষ বসবাস করেন। মোট জাতীয় উৎপাদনে (জিডিপি) সেই সমস্ত রাজ্যের অবদান ৪৪%। আর নিচু আয়ের রাজ্যগুলিতে থাকেন ৩৮% মানুষ। সেই রাজ্যগুলির অবদান মাত্র ১৯%। জিডিপিতে এই দুই ধরনের রাজ্যের অবদানের ফারাক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ সুমন বেরি। তাঁর বক্তব্য, সব রাজ্যের আর্থিক উন্নয়নের কৌশল এক হতে পারে না। এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করে পদক্ষেপের প্রয়োজন। এ দিকে, আজ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের (এডিবি) রিপোর্টে পূর্বাভাস, চলতি অর্থবর্ষে (২০২৫-২৬) ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে ৬.৫%। এপ্রিলের রিপোর্টে ৭% বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল তারা। তাদের বক্তব্য, আমেরিকার শুল্কের প্রভাবে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে অর্থনীতির গতি কমবে।
আজ হায়দরাবাদে ‘বিনিয়োগের গতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে জাতীয় অর্থনীতি সংক্রান্ত সমস্যা’ শীর্ষক এক বক্তৃতায় অর্থনীতিবিদ বেরি বলেন, ‘‘জিডিপিতে রাজ্যগুলির অবদানের ফারাক দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তামিলনাড়ু, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের রাস্তা এক হতে পারে না। তবে পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলির সামনে অগ্রগতির সুযোগ রয়েছে। বিহার, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশকে বিমারু রাজ্য বলা হত। তারা এখন আর্থিক উন্নয়নের পথে পা বাড়িয়েছে।’’
এই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের ব্যাখ্যা, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৭.৮%। যা ছিল প্রত্যাশার তুলনায় অনেকটাই বেশি। কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৫০% শুল্ক চাপানোর পরে তার বিরূপ প্রভাব অর্থনীতির উপরে পড়তে শুরু করলে এই হার আর ধরে রাখা যাবে না। এ ব্যাপারে সমস্ত মূল্যায়ন এবং আর্থিক সংস্থা মোটামুটি একমত। এই অবস্থায় কোন রাজ্যের অর্থনীতি কী ভাবে এগোতে পারে, তার উপরেই নির্ভর করবে বৃদ্ধির হার ঠিক কোন জায়গায় পৌঁছয়। এডিবি তাদের বৃদ্ধির পূর্বাভাস আগের থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৬.৫ শতাংশে নামিয়েছে। তাদের বক্তব্য, শুধু এ বছর নয়, ট্রাম্প-শুল্কের প্রভাব থাকতে পারে ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষেও। প্রথম ত্রৈমাসিকে সরকারি খরচ এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা অর্থনীতিতে গতি এনেছিল। তা এ বার কমবে। তবে আমেরিকা ছাড়া অন্যান্য দেশে পণ্য রফতানি কতটা ছড়ানো যায়, পরিষেবা রফতানি কতটা বাড়ে এবং দেশের বাজারে চাহিদা কেমন থাকে তার উপরে নির্ভর করছেঅনেক কিছু।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)