প্রতীকী ছবি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চলতি অর্থবর্ষের আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে আগেই। সম্প্রতি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই করেছে স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা। আর বৃহস্পতিবার মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ ইনভেস্টরস সার্ভিস জানিয়ে দিল, ২০১৯ সালে ভারতের বৃদ্ধির হার নামবে অতীতের পূর্বাভাসেরও নীচে। তা হতে পারে ৫.৬%। তারা জানিয়েছে, বিনিয়োগকে চাঙ্গা করার জন্য কেন্দ্র ধারাবাহিক পদক্ষেপ করলেও তার কোনওটিই ক্রেতার চাহিদার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়। অথচ, এ দফায় বৃদ্ধি মূলত গোত্তা খাচ্ছে চাহিদার খরার জন্যই।
এর আগে গত সপ্তাহে গোটা অর্থবর্ষের (২০১৯-২০) বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.২% থেকে ছেঁটে ৫.৮% করেছিল মুডি’জ। সেই সঙ্গে ‘স্থিতিশীল’ থেকে কমিয়ে ভারতের অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গিও করেছিল ‘নেতিবাচক’। আর এ দিন ‘গ্লোবাল ম্যাক্রো আউটলুক ২০২০-২১’-এ তারা আরও এক বার জানিয়েছে, দেশের অর্থনীতির ঝিমুনি আগের আশঙ্কার চেয়ে দীর্ঘায়িত হতে পারে। ২০২০ এবং ২০২১ সালে বৃদ্ধির হার কিছুটা মাথা তুললেও (যথাক্রমে ৬.৬% এবং ৬.৭%) তা খুব ভাল জায়গায় পৌঁছতে পারবে না।
কেন এই পরিস্থিতি? মূল্যায়ন সংস্থাটির ব্যাখ্যা, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময় থেকেই ভারতের বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করে। তখন তার পিছনে কাজ করেছিল বিনিয়োগে ধাক্কা। তবে চাহিদার পরিস্থিতি ভাল থাকায় একটা সময় পর্যন্ত বৃদ্ধি কিছুটা হলেও সন্তোষজনক জায়গায় ছিল। কিন্তু এ বার কর্মসংস্থান এবং চাহিদার খরার প্রভাব সরাসরি পড়েছে বৃদ্ধির উপর। ফলে একটা সময়ে যে হার ছিল ৮ শতাংশের কাছাকাছি, গত এপ্রিল-জুনেই তা কমে দাঁড়ায় ৫%।
আশঙ্কার বার্তা
• ২০১৯ সালে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে ৫.৬% করল মুডি’জ।
• এর আগে অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গিও তারা ‘স্থিতিশীল’ থেকে কমিয়ে এনে ‘নেতিবাচক’ করেছিল।
জানিয়েছিল,অর্থনীতি দুর্বল। এই ঝিমুনি আরও লম্বা হতে পারে।
কারণ কী
• মূল্যায়ন সংস্থার বক্তব্য, লগ্নি শ্লথ হচ্ছিল আগে থেকেই। এ বার বিপদ বেড়েছে সরাসরি বিক্রিবাটা ধাক্কা খাওয়ায়।
• শিল্পকে চাঙ্গা করতে কেন্দ্র বেশ কিছু পদক্ষেপ করলেও, সেগুলির সঙ্গে সরাসরি চাহিদার কোনও সম্পর্ক নেই।
• ক্রেতার হাতে যথেষ্ট পরিমাণে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমার সুফল।
কিন্তু বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে গত কয়েক মাস ধরে কেন্দ্র তো টানা দাওয়াই দিয়ে চলেছে! কর্পোরেট কর ৩০% থেকে নামিয়ে এনেছে ২২ শতাংশে। বিদেশি লগ্নিকে উৎসাহিত করার জন্য নতুন উৎপাদন সংস্থার করের হার করেছে ১৫%। ত্রাণ ঘোষণা করেছে গাড়ি, আবাসন-সহ কয়েকটি ক্ষেত্রের জন্য। এ ব্যাপারে মুডি’জ়ের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত এমন কোনও পদক্ষেপ দেখা যায়নি যা সরাসরি চাহিদাকে উজ্জীবিত করতে পারে। এমনকি, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক টানা সুদ ছাঁটাই করলেও ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নগদের সমস্যার জন্য ঋণ সরবরাহ টানা ধাক্কা খেয়েছে। ফলে সুদ কমার সুবিধাও বণ্টন করা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy