Advertisement
E-Paper

ফ্ল্যাট-বাড়ির চাহিদায় সবার শেষে কলকাতা

কেনার লোক নেই। কলকাতায় ফ্ল্যাট-বাড়ির চাহিদা তাই তলানিতে। বিক্রির নিরিখে দেশের ৮টি বড় শহরের মধ্যে সবার শেষে। অবস্থা এতটাই বেহাল যে, এ বার মোটা টাকা ঢেলে নতুন প্রকল্প তৈরির আগেও দশ বার ভেবে দেখতে শুরু করেছেন নির্মাতারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৬ ০২:৪২

কেনার লোক নেই। কলকাতায় ফ্ল্যাট-বাড়ির চাহিদা তাই তলানিতে। বিক্রির নিরিখে দেশের ৮টি বড় শহরের মধ্যে সবার শেষে। অবস্থা এতটাই বেহাল যে, এ বার মোটা টাকা ঢেলে নতুন প্রকল্প তৈরির আগেও দশ বার ভেবে দেখতে শুরু করেছেন নির্মাতারা। চাহিদার অভাবের ছাপ পড়ছে সরবরাহে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ রাজ্যে কল-কারখানা গড়তে বড় লগ্নির দেখা নেই বহু দিন। তার উপর তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যাঙ্কিং শিল্পেও নতুন কর্মসংস্থান না বাড়লে, পরিস্থিতির চাকা ঘুরবে না। মার খাবে ফ্ল্যাট বিক্রি।

আটটি শহরে নির্মাণ শিল্পের হাল নিয়ে মঙ্গলবার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্ক। দেখা যাচ্ছে— দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু তো বটেই, কলকাতাকে পিছনে ফেলে দিয়েছে হায়দরাবাদ, পুণে, আমদাবাদও। ২০১৬ সালের প্রথম ছ’মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কলকাতায় ফ্ল্যাটের বিক্রি কমেছে ১০%। যার মূলে রয়েছে নতুন ক্রেতার অভাব। এই সময়ে এ শহরে বিক্রি হয়েছে ১০ হাজারের কিছু বেশি ফ্ল্যাট। সেখানে পুণের মতো শহরে বিক্রি হওয়া ফ্ল্যাটের সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের দাবি, পুণেতে তথ্যপ্রযুক্তি ও উৎপাদন শিল্পের রমরমা এই ফারাক তৈরি করে দিচ্ছে।

নাইট ফ্র্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ স্যমন্তক দাসের দাবি, লগ্নি ও উন্নয়নের অভাবে কাজের সুযোগ তৈরিতে টান পড়েছে। যথেষ্ট সংখ্যায় বাড়ছে না নতুন ক্রেতা। তাই বাজার সেই তিমিরেই। তিনি বলেন, ‘‘কর্মসংস্থানের কথা ভেবেই তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যাঙ্কিংয়ে লগ্নি টানতে জোর দিতে হবে রাজ্যকে। নতুন নীতি আনতে হবে। নইলে আবাসন-বাজার তলানিতে ঠেকতে বাধ্য।’’

যেমন, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে লগ্নি টানার জন্য বিশেষ আর্থিক অঞ্চল (সেজ)-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো জরুরি বলে মনে করছে শিল্পমহল। সেজ-এর কথা সরাসরি উল্লেখ না করলেও স্যমন্তকবাবু মনে করেন, ইনফোসিস ও উইপ্রোর মতো বড় সংস্থার লগ্নি টানতে রাজ্যকে সক্রিয় হতেই হবে। তার কারণ বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ। যার হাত ধরে তৈরি হবে নতুন ক্রেতা।

শিল্পমহলের মতে, রাজ্যের প্রতিশ্রুত পরিকাঠামো সময়ে দিতে না পারাও তথ্যপ্রযুক্তিতে লগ্নি না আসার অন্যতম কারণ। সেই বাম আমল থেকে এখনও দূষণের সমস্যায় ভুগছে বানতলা তথ্যপ্রযুক্তি তালুক। চর্ম শিল্প পাশে থাকায় ও পর্যাপ্ত নিকাশির অভাবে তাকে বরাবর তাড়া করেছে দূষণের ভূত। সঙ্গে আইনি জটিলতা। হাপিত্যেশ করতে হয়েছে নবদিগন্তর ধাঁচে দেখভাল করার কর্তৃপক্ষ তৈরির জন্য। এখনও সেখানে বাস্তবায়িত হয়নি টেক মহীন্দ্রার লগ্নি। কগনিজ্যান্ট ব্যবসা চালু করেও দূষণ সমস্যায় নাজেহাল। রাস্তা, আলো, জল, বিদ্যুতের মতো ন্যূনতম নাগরিক পরিষেবার অভাবে ফাঁকা মাঠ হয়ে পড়ে নোনাডাঙা তালুকও। শিল্পমহলের দাবি, এই ছবির বদল দরকার।

নতুন কাজের সুযোগ তেমন তৈরি না হওয়ায় ক্রেতা বাড়ন্ত। তা ছাপ ফেলছে জোগানে। গত বছরের তুলনায় নতুন প্রকল্প ২% কমেছে। রাজারহাট ও দক্ষিণ শহরতলি ছাড়া অন্য কোথাও নতুন প্রকল্প নেহাতই কম। শহরের মুখ কিছুটা বাঁচিয়ে প্রায় ১৬৫% হারে শুধু বেড়েছে দেড় কোটি টাকা ও তার বেশি দামের বাড়ি ও ফ্ল্যাটের বিক্রি।

kolkata APARTMENTS
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy