শুধু সরকারি সুরক্ষা বলয়ে থাকলেই হবে না, ব্যবসা বাড়িয়ে বিভাগকে নিজের পায়ে দাঁড় করাতে হবে। ফাইল ছবি
চিঠি বণ্টন ব্যবসায় এক সময় ডাক বিভাগের একচেটিয়া আধিপত্য থাকলেও পরে বেসরকারি মহল তাতে ভাগ বসিয়েছে। প্রযুক্তির ব্যবহারেও কমেছে চিঠি লেনদেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাই পুরনো ব্যবসার পাশাপাশি বিকল্প নানা নাগরিক পরিষেবা এনে আয় বাড়াতে কর্মী ইউনিয়নের সভায় বার্তা দিলেন ডাক বিভাগের ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কলের (পশ্চিমবঙ্গ, আন্দামান নিকোবর ও সিকিম) চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল জে চারুকেশী। তাঁর দাবি, শুধু সরকারি সুরক্ষা বলয়ে থাকলেই হবে না, ব্যবসা বাড়িয়ে বিভাগকে নিজের পায়ে দাঁড় করাতে হবে। উন্নত করতে হবে কর্মসংস্কৃতিও। তবে আয় বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা মানলেও কেন্দ্রের নানা পদক্ষেপে ডাক বিভাগের বিভিন্ন ব্যবসা হাতছাড়া এবং ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্ক (আইপিপিবি) বিলগ্নিকরণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ন্যাশনাল ফেডারেশন অব পোস্টাল এমপ্লয়িজ় (এনএফপিই)।
শুক্রবার সংগঠনের সভায় চারুকেশীর বক্তব্য, দেশের গ্রামাঞ্চল এখনও বিভিন্ন ডাক ও আর্থিক পরিষেবার উপরে নির্ভরশীল। প্রযুক্তি যেমন ডাক বিভাগের ব্যবসায় কিছু ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে, তেমনই তাদের পরিষেবা উন্নতও করেছে। ডাককর্মীরাও প্রযুক্তির সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিয়েছেন জানিয়ে তাঁর বার্তা, এ বার আধার নথিভুক্তির মতো নতুন পরিষেবার মাধ্যমে আয় বাড়ানো এবং কর্মসংস্কৃতি উন্নত করায় জোর দিতে হবে। চারুকেশীর কথায়, ‘‘এটা অবশ্য শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অন্যান্য জায়গারও সমস্যা।’’ তাঁর দাবি, ডাক বিভাগকে সরকারি দফতর হওয়ায় সুরক্ষার কথা বলা হয়। কিন্তু সেই সুরক্ষা মানে কাজের সুরক্ষা, কাজ না করার জন্য সুরক্ষা নয়। ইউনিয়নকেও এই বিষয়টি ভাবতে হবে।
আয় বৃদ্ধি বা কর্মসংস্থানের গুরুত্বের কথা মানছেন এনএফপিই-র সেক্রেটারি জেনারেল জনার্দন মজুমদার। তবে সভার পরে তাঁর দাবি, কেন্দ্র যে সব পদক্ষেপ করছে, তাতে বিভাগের ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন দানা বাঁধছে। বস্তুত, তাঁদের আপত্তি আইপিপিবি তৈরির পদ্ধতি নিয়ে। জনার্দনবাবু এবং এনএফপিই-র এই সার্কলের সম্পাদক অসিত বঙ্গবাসের দাবি, আইপিপিবি-র ১০০% শেয়ার এখন কেন্দ্রের হাতে। ফলে কেন্দ্রের নীতি মেনে ভবিষ্যতে তা বিলগ্নিকরণের পথ খোলা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ডাক বিভাগের আয়ের মূল সূত্র স্বল্প সঞ্চয়ের বিপুল পুঁজিরও নাগাল পাবে বেসরকারি ক্ষেত্র।
উল্লেখ্য, বছরের শুরুতে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের যে নতুন পরিকল্পনা ডাক বিভাগ নিয়েছে, তাতে পরে তাদের হাতে ডাক বিলির মূল পরিষেবা রেখে বাকিটা (বিমা, ব্যাঙ্ক-সহ আর্থিক পরিষেবা) আইপিপিবি-কে দেওয়ার প্রস্তাব করা রয়েছে। দুই নেতার দাবি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি ডাক বিভাগেরই ব্যাঙ্ক চালু করুক। চারুকেশীর অবশ্য আশ্বাস, আরও ভাল ভাবে সর্বত্র আর্থিক পরিষেবা পৌঁছে দিতেই তৈরি হয়েছে ডাক বিভাগের এই নিজস্ব পেমেন্টস ব্যাঙ্ক। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম মেনে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার জন্য আলাদা কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy