জীবন ও স্বাস্থ্য বিমায় পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি (গুড্স অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স) তুলে দেওয়ার পথে এগোচ্ছে কেন্দ্র। সূত্রের খবর, পরবর্তী বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে জিএসটি কাউন্সিল। সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে মন্ত্রিগোষ্ঠী বা গ্রুপ অফ মিনিস্টার্স (জিওএম) এ ব্যাপারে সমর্থন জানাবে বলে জানা গিয়েছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ বার বৈঠকে বসে জিএসটি কাউন্সিল। তার আগে বিমা নিয়ন্ত্রণকারী ‘ইনশিয়োরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ বা আইআরডিএআইয়ের থেকে এ ব্যাপারে মতামত চেয়েছিল সরকার। সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট ইতিমধ্যেই জমা করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সংস্থা। একে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে সূত্র মারফত মিলেছে খবর।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তা। তাঁর অনুমান, মন্ত্রিগোষ্ঠী বা গ্রুপ অফ মিনিস্টার্সের (জিওএম) সদস্যেরা ফের একবার পুরনো সুপারিশ জমা করতে পারেন। সূত্রের খবর, তাঁরা প্রবীণ নাগরিক ছাড়া অন্যান্য গ্রাহকের ক্ষেত্রে ৫ লক্ষ টাকা কভারেজের স্বাস্থ্য বিমায় জিএসটি মকুবের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে ৫ লক্ষ টাকার বেশি কভারেজের স্বাস্থ্য বিমায় ১৮ শতাংশ জিএসটি কার্যকর হবে।
অন্য দিকে, বর্তমানে জীবন বিমার টার্ম পলিসি ও পারিবারিক ফ্লোটার পলিসির ক্ষেত্রে ১৮ শতাংশ জিএসটি রয়েছে। এটাও কমিয়ে আনা বা মকুব করতে চাইছেন মন্ত্রিগোষ্ঠী বা গ্রুপ অফ মিনিস্টার্সের (জিওএম) সদস্যেরা। সূত্রের খবর, গত বছরের অক্টোবরে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। যদিও জিএসটি কাউন্সিলের কাছে কোনও রিপোর্ট জমা করা হয়নি। উল্লেখ্য, এই মন্ত্রিগোষ্ঠীকে তৈরি করেছেন স্বয়ং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
কেন্দ্রের অনুমান, প্রস্তাবিত ছাড়ের ফলে বছরে রাজস্ব ক্ষতি হবে ২,৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জীবন বিমার ক্ষেত্রে প্রায় ২০০ কোটি এবং স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম থেকে কর বাবদ ২,৪০০ কোটি টাকা আসবে না সরকারি কোষাগারে। তবে অন্য খাতে জিএসটির অদলবদল করে সেই ক্ষতি অনায়াসে পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
আরও পড়ুন:
মোদী সরকার মনে করে বিমায় জিএসটি কমলে লাফিয়ে বাড়বে গ্রাহকসংখ্যা। সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০২৪-’২৫ আর্থিক বছরে দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপির (গ্রস ডোমেস্টিক প্রোডাক্ট) মাত্র ৩.৭ শতাংশ আসে বিমা ক্ষেত্র থেকে। সেখানে বিশ্বের অন্যান্য উন্নত দেশগুলিতে এর গড় প্রায় সাত শতাংশ। সেই কারণেই বিমার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে এতে মেগা ছাড় দিতে চাইছেন মন্ত্রিগোষ্ঠী বা গ্রুপ অফ মিনিস্টার্সের সদস্যেরা।