Advertisement
E-Paper

সঞ্চয় কমেছে, পরিকাঠামোর টাকা কোথায়

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশে সার্বিক সঞ্চয়ের হার ২০১৭-১৮ সালে ৩০ শতাংশের কোঠায় নেমেছে।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অর্থনীতি চাঙ্গা করতে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক টানা সুদ ছেঁটেছে, যাতে শিল্প সস্তায় ঋণ পায়। পাল্লা দিয়ে সুদ কমেছে ব্যাঙ্ক, ডাকঘর জমাতেও। ফলে কমেছে মানুষের সঞ্চয়।

অর্থনীতিবিদদের মতে, কেনাকাটা ধাক্কা খাওয়ার পিছনে গৃহস্থের সঞ্চয় কমা অন্যতম কারণ। কারণ মানুষ টাকা জমিয়েই দামি জিনিস কেনেন। এ বার বৃদ্ধিতে গতি ফেরাতে পরিকাঠামোয় ১০২ লক্ষ কোটি টাকা লগ্নির কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেখানেও সঞ্চয় কমা বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা তাঁদের।

অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যা, মোদী সরকার পরিকল্পনা করেছে, ১০২ লক্ষ কোটি টাকার মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য দেবে ৩৯% করে। তাঁদের প্রশ্ন, কেন্দ্রই হোক বা রাজ্য, তারা এত টাকা পাবে কোথায়? ফলে বাজার থেকে ধার করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু দেশে এমনিতেই দীর্ঘমেয়াদি সঞ্চয়ের ভাণ্ডার কম। তার মধ্যে মোদী জমানায় সঞ্চয়ের পরিমাণও কমেছে। ফলে ধার করার জন্যও এত টাকা মিলবে কি?

সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশে সার্বিক সঞ্চয়ের হার ২০১৭-১৮ সালে ৩০ শতাংশের কোঠায় নেমেছে। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার আগে যা ছিল প্রায় ৩৫%। পারিবারিক সঞ্চয়ের হার ২৩% থেকে হয়েছে ১৭%। অর্থ মন্ত্রকের এক আর্থিক উপদেষ্টা বলেন, ‘‘মনমোহন সিংহের জমানায় সঞ্চয়ের হার ২০০৩ সালের ২৫% থেকে ২০০৮-এ ৩৬% ছাপিয়ে যায়। যা বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হওয়ার অন্যতম স্তম্ভ ছিল।’’

অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, সঞ্চয় এতটা বাড়ায় তখন পরিকাঠামোতেও অনেক বেশি লগ্নি হয়েছিল। বাজারে চাহিদারও অভাব ছিল না। এই দুইয়ে ভর করেই বৃদ্ধির হার ২০০৮ সালের আগে ৯% ছুঁয়েছিল। মন্দার পরে বৃদ্ধি থমকালেও সঞ্চয়ের হার বেশি নামেনি। ২০১২-তেও তা ৩৪% ছিল।

নির্মলা পরিকাঠামো প্রকল্পের যে রূপরেখা প্রকাশ করেছেন, তাতে চলতি বছরে ১৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। এর মধ্যে ৭.৮৮ লক্ষ কোটি বরাদ্দ হয়েছে। সাধারণত পরিকাঠামোয় কেন্দ্র-রাজ্য মিলিয়ে বছরে ১০ লক্ষ কোটি খরচ হয়। কিন্তু পরের অর্থবর্ষে ১৯.৫ লক্ষ কোটি খরচের পরিকল্পনা রয়েছে। হিসেব বলছে, এর মধ্যে কেন্দ্র-রাজ্যকে দিতে হবে প্রায় ১৫ কোটি। বাড়তি খরচের সিংহভাগই ধার করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি মানুষের আয় না-বাড়ে ও তাঁরা সঞ্চয়ই না-করেন, তা হলে ধার মিলবে কোথা থেকে?

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্স অ্যান্ড পলিসির অর্থনীতিবিদ এন আর ভানুমূর্তির যুক্তি, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক টানা পাঁচ বার সুদ কমিয়েছে। ফলে ব্যাঙ্কগুলিতেও সুদ নেমেছে। ধাক্কা লেগেছে সঞ্চয়ে। এতে ব্যাঙ্কের ধার দেওয়ার পুঁজিও কমেছে।’’ মন্ত্রকের যুক্তি, সব টাকাই যে ধার করে আসবে তা নয়। সরকার ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জমি বেচে, পরিকাঠামো ব্যবহারে ফি বসিয়েও তা তোলা হবে। কিন্তু তাতেও যে পুরো টাকা উঠবে না, সেটাও মানছেন তাঁরা।

Infrastructure Economy Finance Ministry
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy