‘অপারেশন সিঁদুর’-এ অংশ নেওয়া ড্রোন সংস্থার ঘুরে গেল ভাগ্যের চাকা। বাজার থেকে ১০ কোটি ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮৫৫ কোটি) লগ্নি সংগ্রহ করেছে নয়ডার স্টার্টআপ। বিপুল অঙ্কের ওই বিনিয়োগ তাদের জোগাড় করে দেয় মার্কিন ফার্ম ‘জেনারেল ক্যাটালিস্ট’। এর ফলে পাইলটবিহীন উড়ুক্কু যান নির্মাণকারী সংস্থাটির মোট মূলধনের পরিমাণ পৌঁছেছে ১৪ কোটি ৫০ লক্ষ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় টাকার অঙ্কটা ১,২০০ কোটির বেশি বলে জানা গিয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এর আগে দেশের আর কোনও অ্যারোস্পেস সংস্থা বাজার থেকে এত অর্থ সংগ্রহ করতে পারেননি।
ড্রোন নির্মাণকারী নয়ডার স্টার্টআপটির নাম ‘রাফে এমফাইব্র’। সংস্থার সাফল্য নিয়ে ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন চিফ এগজ়িকিউটিভ অফিসার বা সিইও বিবেক মিশ্র। তাঁর কথায়, ‘‘পাইলটবিহীন উড়ুক্কু যানের বাজার মূলত দখল করে রেখেছে চিন। এই ব্যবসায় বেজিংকে হারানোর মূল চাবিকাঠি হল নিত্যনতুন নকশার ড্রোন তৈরি করে সবাইকে চমকে দেওয়া। পাশাপাশি, অত্যাধুনিক এই যন্ত্র তৈরির একটা শক্তিশালী বাস্তুতন্ত্র থাকতে হবে আপনার হাতে।’’
আরও পড়ুন:
এ ব্যাপারে নিজের সংস্থার উদাহরণ দিয়েছেন মিশ্র। বলেছেন, ‘‘লম্বা রাস্তা পাড়ি দিতে সক্ষম ড্রোনগুলিতে থাকে বিশেষ এক ধরনের ইঞ্জিন। এ ক্ষেত্রে বাজারে যে পাইলটবিহীন যানগুলি রয়েছে, সেগুলির যথেষ্ট ভারী। তাদের পারফরম্যান্সও যে দুর্দান্ত তেমন নয়। তাই যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন ধরনের ড্রোন ইঞ্জিন নির্মাণের দিকে মন দিয়েছিলাম আমরা। সেখান থেকেই সাফল্য এসেছে।’’
‘রাফে এমফাইব্র’ জানিয়েছে, আগামী দিনে আরও হালকা এবং উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ড্রোন তৈরি করবে তারা। ভারতীয় সেনার থেকে মোটা অঙ্কের বরাত পাওয়ার আশা রয়েছে তাদের। সে ক্ষেত্রে কয়েকশো ড্রোন ফৌজকে সরবরাহ করবে নয়ডার ওই স্টার্টআপ। সম্প্রতি তাদের অন্যতম প্রতিযোগীর থেকে ৪৫০টি আত্মঘাতী ড্রোন কিনছে সেনা। ফলে বাহিনীর জন্য একেবারে অন্য ধরনের একটি পাইলটবিহীন যান তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে ‘রাফে এমফাইব্র’।
চলতি বছরের ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গি হামলায় পর্যটক-সহ প্রাণ হারান ২৬ জন। ওই ঘটনার বদলা নিতে ৯ মে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জন্মু-কাশ্মীরের একাধিক সন্ত্রাসবাদীদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় সেনা। বাহিনীর এই অভিযানের নাম রাখা হয়, ‘অপারেশন সিঁদুর’। এতে নয়ডার স্টার্টআপটির ড্রোন ব্যবহার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।