অবশেষে টানা পতনের পথে খানিক থমকাল শেয়ার বাজার। ছ’দিন ধরে একনাগাড়ে পড়ার পরে শ্বাস নিল কিছুটা উত্থানে ভর করে।
এই কয়েক দিনে মোট ১,৭৫২ পয়েন্ট পড়ার পরে মঙ্গলবার সেনসেক্স ১৯৫.৬৪ পয়েন্ট বেড়েছে। দাঁড়িয়েছে ২৫,৯৬০.৭৮ অঙ্কে। নিফ্টি ৭৩.২০ পয়েন্ট বেড়ে হয়েছে ৮০০২.৩০।
তবে এ দিনও অব্যাহত ছিল টাকার দামে পতন। ডলারের সাপেক্ষে তা নেমে গিয়েছে আরও ৯ পয়সা। এক ডলার পৌঁছেছে ৬৮.২৫ টাকায়। গত ন’মাসের মধ্যে টাকার দাম এত নীচে নামেনি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা পতনের গেরোয় পড়া শেয়ার বাজার এ দিন মাথা তুলেছে দু’তিনটি কারণে। এগুলি হল—
• নোট বাতিলজনিত নিয়ম-কানুন কৃষকদের জন্য কিছুটা শিথিল করা। যেখানে পুরনো পাঁচশো বা হাজারের নোট দিয়েই চাষের জন্য বীজ কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাঁদের। যাতে রবি মরসুমের চাষ মার না-খায় এবং চাষিরা সমস্যায় না-পড়েন।
• বৃহস্পতিবার আগাম লেনদেনের সেট্লমেন্টের দিন। যে-সব লগ্নিকারী হাতে শেয়ার না-থাকা সত্ত্বেও তা বিক্রি করে রেখেছেন, তাঁরা সেট্লমেন্টের দিন তা হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এ জন্য তাঁরা কোমর বেঁধে নেমেছেন শেয়ার কিনতে।
• পড়তি বাজারে বেশ কিছু ভাল শেয়ার কম দামে কেনার হিড়িক।
তবে সূচক কিছুটা বাড়লেও, বাজার এখনই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। বরং প্রায় সকলেরই ধারণা, এখনও লগ্নির এই জায়গাটি অনিশ্চয়তার এক গলাজলে দাঁড়িয়ে। কারণ কেন্দ্রের পুরনো নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ভারতীয় অর্থনীতিতে আশঙ্কার তুলনায় বেশিই প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
তার উপর বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও অনিশ্চিত বাজারে টানা শেয়ার বেচে চলেছে। এটাও বিশেষজ্ঞ ও লগ্নিকারীদের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। মঙ্গলবারই যেমন সূচক উঠলেও, তারা বেচেছে ৬৯২ কোটি টাকার শেয়ার। আর মূলত এর জেরেই ডলারে টাকার দামও আরও পড়েছে। আর এই সমস্ত কাঁটাতেই এখনও বাজার নিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারছে না সংশ্লিষ্ট মহল।
যে-কারণে এ দিন সূচক উঠলেও লগ্নিকারীরা বেশ সতর্ক হয়েই পা ফেলেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনেও সাবধান থাকবেন তাঁরা। দীর্ঘ মেয়াদে লগ্নি ধরে রাখতে খুব একটা উৎসাহিত হবেন না। বরং পড়তি বাজারে কেনা শেয়ার অল্প কিছু মুনাফা পেলেই বিক্রি করে দেওয়ার প্রবণতা বাড়বে তাঁদের মধ্যে।
সূচকের এ দিনের উত্থানের পিছনে অবশ্য ভারতীয় আর্থিক সংস্থাগুলির শেয়ার কেনারও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি মোটা অঙ্কের শেয়ার বেচলেও, ভারতের ওই সব সংস্থা উল্টো পথে হেঁটে ঢেলেছে ১,০৭৫ কোটি।