E-Paper

কেন্দ্রের ছাড়পত্র বকেয়া, তাজপুর প্রশ্নে দাবি শশীর

দু’বছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য আদানি গোষ্ঠীর অ্যাপসেজ (আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জ়োন) সংস্থার হাতে ‘প্রভিশনাল লেটার অব ইনটেন্ট’ বা প্রাথমিক আগ্রহপত্র তুলে দিয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪
শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী শশী পাঁজা।

শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী শশী পাঁজা। —ফাইল চিত্র।

তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দরের জন্য এখনও কেন্দ্রের ছাড়পত্র মেলেনি বলে জানালেন রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী শশী পাঁজা। তাঁর বক্তব্য, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ছাড়পত্রই বকেয়া রয়ে গিয়েছে।

দু’বছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির জন্য আদানি গোষ্ঠীর অ্যাপসেজ (আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জ়োন) সংস্থার হাতে ‘প্রভিশনাল লেটার অব ইনটেন্ট’ বা প্রাথমিক আগ্রহপত্র তুলে দিয়েছিল। তার পরে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, বিদেশ ও জাহাজ মন্ত্রকের থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র চাওয়া হয়। বিদেশ, প্রতিরক্ষা, জাহাজ মন্ত্রক তা দিয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক শর্তযুক্ত ছাড়পত্র দিয়েছিল। সঙ্গে জানিয়েছিল কিছু পর্যবেক্ষণও। তার পরে আর তাজপুরের বন্দর নিয়ে কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। আজ দিল্লিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পশ্চিমবঙ্গ দিবসের অনুষ্ঠানে শশী বলেন, ‘‘তাজপুর বন্দরে কেন্দ্রের ছাড়পত্র এখনও বকেয়া।’’ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক শর্তযুক্ত ছাড়পত্র দিয়ে যে ‘পর্যবেক্ষণ’ করেছিল, তার জবাব বন্দর তৈরি করতে ‘আগ্রহী সংস্থা’ বা আদানি গোষ্ঠীকে দিতে হবে।

সম্প্রতি আমেরিকার আদালতে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে চার্জশিট জমা পড়েছে। তার পরে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস আদানি নিয়ে সরব হলেও, তৃণমূল কংগ্রেস এ বিষয়ে একটু দূরত্ব রাখছে। যদিও তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র-সহ একাধিক সাংসদ আদানির বিরুদ্ধে সরব। প্রশ্ন উঠেছে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে কি গৌতম আদানিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে? রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রীর উত্তর, বিদেশি দূতাবাস, বণিকসভা, সকলের কাছেই আমন্ত্রণ যাবে। নির্দিষ্ট ভাবে একজনের বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।

তাজপুর বন্দরের ছাড়পত্রের পাশাপাশি তাজপুর-রঘুনাথপুর সমেত রাজ্যের ছ’টি শিল্প করিডরের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক বা এডিবি-র ঋণ নিয়েও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছে রাজ্য। প্রথম দফায় দু’টি করিডর তৈরি হবে তাজপুর-রঘুনাথপুর এবং ডানকুনি-ঝাড়গ্রামের মধ্যে। মোট ৪৩৬২ কোটি টাকার প্রকল্পে এডিবি ঋণ দেবে ৩৪৮৫ কোটি। নীতি আয়োগ, কেন্দ্রীয় শিল্পোন্নয়ন দফতরের ছাড়পত্রের পরে সেপ্টেম্বরে ফাইল গিয়েছে অর্থ মন্ত্রকে। এ ছাড়া, রাজ্যের পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা মজবুত করতে ২৫ কোটি ডলার বা ২০৭২ কোটি টাকার ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বুস্টিং লজিসটিক্স এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড ট্রেড ফেসিলিটেশন’ প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাঙ্ক ১৫ কোটি ডলার ঋণ মঞ্জুর করেছে। তার ছাড়পত্রের জন্যও সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রকে ফাইল পাঠানো হয়েছে বলে খবর। শশী বলেন, ‘‘রাজ্যের প্রকল্পে এডিবি, বিশ্ব ব্যাঙ্কের ঋণ মঞ্জুর থেকে স্পষ্ট, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি তাদের আস্থা রয়েছে। তা সে যতই রাজ্যের সমালোচনা করা হোক না কেন।’’ বিরোধীদের কটাক্ষ করে তাঁর বার্তা, ‘‘যাঁরা লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী প্রকল্পের নিন্দা করেছিলেন, তাঁরা ফের শূন্যে পৌঁছেছেন। আর এক শিবির ভুল বুঝতে পেরে নিজেদের রাজ্যে এর অনুকরণ করছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Adani Group Central Government State Government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy