ভারতের অর্থনীতির বহর ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন ফেরি করে বেড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর নেতা-মন্ত্রীরা। কিন্তু ওই লক্ষ্য বর্তমানে দেশের ঝিমিয়ে থাকা আর্থিক পরিস্থিতিতে বেশ ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদ আর নাগরাজ। রবিবার তাঁর বার্তা, মোদীর ওই স্বপ্ন সত্যি করতে হলে অর্থনীতিকে এগোতে হবে ৯% হারে। কিন্তু তা মাথা তোলার বদলে যে ভাবে নাগাড়ে গোত্তা খেয়ে পড়ছে, তাতে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য অন্তত এই মুহূর্তে ‘কল্পনাতীত উচ্চাকাঙ্ক্ষী’।
কিছু দিন আগে অর্থনীতির ৫ লক্ষ কোটি ডলার হওয়ার কোনও আশা দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ-ও। বলেছিলেন বছরের পর বছর বৃদ্ধির হার যে ভাবে কমছে তাতে একটা জিনিসই স্পষ্ট, অর্থনীতি এক ‘ভয়ঙ্কর’ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে রয়েছে। মেরেকেটে স্বল্পমেয়াদে ৫.৫-৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি সম্ভব। চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নামায় এবং সম্প্রতি গোটা অর্থবর্ষের বৃদ্ধি ৫ শতাংশে আটকে থাকবে বলে খোদ সরকারের পূর্বাভাস হাতে আসায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। আরও তীক্ষ্ণ হয়েছে মোদীর ৫ লক্ষ কোটি ডলারের স্বপ্ন নিয়ে বিরোধী-সহ বিভিন্ন মহলের ব্যাঙ্গ-বিদ্রূপ। এই পরিস্থিতিতে রবিবার ইন্দিরা গাঁধী ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের অর্থনীতির অধ্যাপক নাগরাজের দাবি, ‘‘চলতি দশকের পরিসংখ্যান সামনে রাখলে, ওই লক্ষ্যকে যদি অসম্ভব না-ও ধরি, একটু বিশেষ রকমের ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো তো বটেই। গত জুলাইয়ে করা আমার হিসেব অনুযায়ী, ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হতে গেলে ২০২০ থেকে ২০২৪ আর্থিক বছর পর্যন্ত প্রকৃত অর্থে বৃদ্ধির হার হতে হবে গড়ে ৯%। কিন্তু তা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।’’
৯% অনেক দূরের কথা, অর্থনীতি উল্টে তলানিতে নামার নতুন রেকর্ড গড়ার দিকে চলেছে। মোদী সরকারেরই পরিসংখ্যান মন্ত্রকের অনুমান (৫% বৃদ্ধি) যদি সত্যি হয়, তবে ২০০৮ সালে বিশ্ব জুড়ে আর্থিক মন্দার পরে ১১ বছরের সব থেকে নীচে নামবে বৃদ্ধি। খারাপ ফলের অনেক রেকর্ড ভাঙতে পারে কারখানার উৎপাদন, বিনিয়োগ বা নির্মাণ ক্ষেত্র।
নাগরাজের দাবি, কয়েক বছর ধরে সুদ কমিয়েও কোনও লাভ হয়নি। অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করাতে আর্থিক ত্রাণ প্রকল্পের দাওয়াই ছাড়া গতি নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy