E-Paper

চা গাছের পাতা ছাড়া অন্য পণ্যের মোড়কে লাগানো যাবে না ‘টি’-এর তকমা, নির্দেশ কেন্দ্রের

অভিযোগ, হার্বাল টি, ফ্লাওয়ার টি ইত্যাদি নামে যে সব পানীয় বা মিশ্রণ বাজারে বিক্রি হচ্ছে, তা কখনওই চা নয়। এই পানীয় বা মিশ্রণের প্যাকেটে কোথাও চা অর্থাৎ ‘টি’ শব্দ লেখা যাবে না।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৪

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

চা গাছের পাতা থেকে যা সরাসরি তৈরি হয় না, তা চা-ই নয়। ফলে একমাত্র ‘ক্যামেলিয়া সিনেন্সিস’ (চায়ের বিজ্ঞানসম্মত নাম) অর্থাৎ চা গাছের পাতা থেকে তৈরি পণ্যের মোড়কে ‘টি’ লেখা যাবে। বাদবাকি কোনও কিছুকে চা তকমা দেওয়া বিভ্রান্তিকর এবং ভুল— বৃহস্পতিবার এমনই কড়া নির্দেশ দিল ভারতের খাদ্য সুরক্ষা এবং গুণমান নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এফএসএসএআই। যেখানে কোন পণ্যের মোড়কে চা লেবেল সেঁটে বিক্রি করা যাবে, কোনটির ক্ষেত্রে যাবে না, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে তারা।নিয়ন্ত্রক এফএসএসএআই দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত এলাকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়ে বাজারে কড়া নজরদারি চালাতে বলেছে। তাদের অভিযোগ, হার্বাল টি, ফ্লাওয়ার টি ইত্যাদি নামে যে সব পানীয় বা মিশ্রণ বাজারে বিক্রি হচ্ছে, তা কখনওই চা নয়। এই পানীয় বা মিশ্রণের প্যাকেটে কোথাও চা অর্থাৎ ‘টি’ শব্দ লেখা যাবে না। যদি কেউ নির্দেশ অমান্য করে, সে ক্ষেত্রে খাদ্য সুরক্ষা আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, ইদানিং বাজারে নানা রকম চায়ের ছড়াছড়ি। কখনও দেখা যাচ্ছে সেগুলি বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ফুলের নামে। কখনও আবার তুলসী থেকে শুরু করে ব্লু টি, মাশরুম টি-র মতো স্বাদের চা চমকে দিচ্ছে ক্রেতাদের। নিয়ন্ত্রকের দাবি, বোতলের গায়ে ‘টি’ শব্দটি উল্লেখ থাকলে বহু মানুষ মনে করেন সেগুলি প্রথাগত চা, অর্থাৎ চা গাছের পাতা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি। কিন্তু বিভিন্ন স্বাদের চা বলে বাজারে আসা পানীয় বা মিশ্রণের সঙ্গে আদতে চা গাছের কোনও সম্পর্কই নেই।সূত্রের দাবি, আদতে মিথ্যে এবং বেআইনি এই প্রচারের বিষয়টি সম্প্রতি নিয়ন্ত্রকের নজরে আনে চা উৎপাদকদের বিভিন্ন সংগঠন। এতে ক্রেতার স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়ারও অভিযোগ তোলে তারা। চা উৎপাদকদের দাবি, যে পণ্যের সঙ্গে চায়ের কোনও সম্পর্ক নেই, তাকে সেই তকমা দিয়ে বিক্রি ক্রেতাদের বোকা বানানো হচ্ছে। তার উপর এতে নষ্ট করা হচ্ছে চায়ের বাজারও। যা গত কয়েক বছর ধরে এমনিতেই টালমাটাল। তাই কড়া পদক্ষেপ করা জরুরি ছিল।নিয়ন্ত্রকের নির্দেশ, একমাত্র প্রথাগত ভাবে চা গাছের পাতা থেকে তৈরি চায়ের প্যাকেটে ‘টি’ বা চা লেখা থাকবে। অন্য কোনও পণ্যে চা লেখা যাবে না। খাদ্য সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা এই কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, স্বাস্থ্যকর পানীয় তৈরি করা যাবে বলে বাজারে যে গুঁড়ো বা মিশ্রণ বিক্রি হচ্ছে, তার উপাদানও সঠিক জানা নেই। স্থানীয় স্তরে তৈরি হলে সে সবে নজরদারি হয় না। তার উপরে চা বলে নাম দেওয়ায় সেই মিশ্রণ পরীক্ষার জন্য এলেও চায়ের নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী যাচাই করা হবে, যা আদৌ সঠিক হবে না বলে কেন্দ্রীয় সংস্থা মনে করছে। কারণ তা চায়ের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিস্টা-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “প্রাকৃতিক ভাবে চা গাছের পাতা থেকে যা তৈরি হয়, সেটাই পান করা উচিত। কোনও কৃত্রিম মিশ্রণ বা চায়ের নাম করে অন্য কিছু পান করলে বিপদ। খুবই ভাল নির্দেশ।” চা পরিচালকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “নির্দেশিকা ভাল ভাবে দেখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের সংগঠনগত ভাবেও আলোচনা রয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tea FSSAI

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy