নোট বাতিলের প্রধান লক্ষ্য ভারতের বাজারে নগদ এবং নগদে লেনদেনের পরিমাণ কমিয়ে আনা, দাবি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় সাড়ে ছ’বছর পরে সেই মোদী সরকারই আজ সংসদে জানাল, বাজারে নগদের পরিমাণ কমেনি। উল্টে তাদের জমানাতেই তা আড়াই গুণ বেড়ে গিয়েছে। ২০১৪ সালের মার্চে বাজারে চালু নোট এবং মুদ্রার মূল্য ছিল ১৩ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২২-এর মার্চে তা ৩১.৩৩ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন লোকসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন, ২০১৬-র নভেম্বরে নোট বাতিলের পরে বাজারে নগদের পরিমাণ কমেছিল। কিন্তু পরে তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। নোটবন্দির বছরেই মার্চে দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় নগদের অঙ্ক ছিল ১৬.৬৩ লক্ষ কোটি টাকা। নোট বাতিলের পরের মার্চে কমে ১৩.৩৫ লক্ষ কোটি টাকায় নেমে যায়। তবে পরবর্তী কালে যে ফের মাথা তুলতে থাকে, তা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। সরকারি তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে মার্চে বাজারে নগদের পরিমাণ বেড়ে ১৮.২৯ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে যায়। অর্থমন্ত্রীর হিসাবে, জিডিপি-র অনুপাতেও নগদের পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৪-র মার্চে যা ছিল ১১.৬%, ২০২২ সালের মার্চেই তা ১৩.৭% ছুঁয়েছে। কংগ্রেস সাংসদ উত্তম কুমার রেড্ডির বক্তব্য, সরকারের তথ্য থেকে স্পষ্ট মোদীর নোট বাতিলে মানুষের শুধু হেনস্থা হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে অর্থনীতির। আদতে তার কোনও লক্ষ্যই পূরণ হয়নি।
অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য যুক্তি, নোট বাতিলের ইতিবাচক প্রভাব কর বাবদ আয়ে দেখা গিয়েছে। নোটবন্দির পরের বছরে আয়কর, কর্পোরেট কর বাবদ আয় ১৮% বেড়েছিল। যা সাত বছরে সর্বোচ্চ। আয়কর থেকে আয় ২৩.৪% বেড়েছিল। রিটার্ন জমা ২৫% বেড়ে ৮৫.৫ লক্ষ থেকে ১.০৭ কোটিতে পৌঁছোয়। যা পাঁচ বছরে সর্বোচ্চ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)