Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Pension

পেনশন পান মোটে ৩৩% দরিদ্র প্রবীণ, মানছে সমীক্ষা

পরিসংখ্যানে স্পষ্ট যে, একে ভারতে সামাজিক সুরক্ষার সরকারি প্রকল্প সংখ্যায় বাড়ন্ত।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:৫০
Share: Save:

প্রতি তিন জনে মোটে এক জন। অর্থাৎ, মেরেকেটে ৩৩ শতাংশ। ভোট-বাজারে প্রচারের ঢক্কা-নিনাদ সত্ত্বেও, সরকারি পেনশন প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছয় দারিদ্রসীমার নীচে থাকা এতটাই কম সংখ্যক প্রবীণের কাছে! এই তথ্য উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন দুই সংস্থা, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টি এইচ চ্যান স্কুল অব পাবলিক হেল্থ এবং সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ সমীক্ষায়।

পরিসংখ্যানে স্পষ্ট যে, একে ভারতে সামাজিক সুরক্ষার সরকারি প্রকল্প সংখ্যায় বাড়ন্ত। তার উপরে সেই সুবিধাটুকুর খবরও সাধারণ মানুষের কাছে ঠিক মতো পৌঁছয় না। তাই অনেকে হয় প্রকল্পের নামই শোনেননি, নয়তো আবছা জানার কারণে আর পা বাড়াননি সেখানে নিজের নাম নথিভুক্তিতে। ফলে অধরা থেকে গিয়েছে প্রাপ্য সুবিধা। একের পর এক সরকারি প্রকল্পে।

যেমন দেখা গিয়েছে, ১৯৯৫ সালে চালু হওয়া ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় পেনশন প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মাত্র ৩০% মানুষ। অথচ সময়ে ওই প্রকল্পের আওতায় নাম লেখালে, তাঁদের মাসে ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা পেনশন পাওয়ার কথা। শুধু তা-ই নয়। ওই প্রকল্পের কথা শুনেছেন ষাট পেরনো দরিদ্র প্রবীণদের মোটে ৫৫%। অর্থাৎ, বাকি ৪৫% সে কথা জানেনই না! সারা দেশে ষাট পেরনোদের মধ্যে সব মিলিয়ে পেনশন প্রাপক মাত্র ৬%।

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৫৪% জানিয়েছেন যে, ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় বিধবা পেনশন প্রকল্প সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধারণা নেই। ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ওই পেনশনের টাকা হাতে পেয়েছেন ন্যায্য প্রাপকদের মাত্র এক-চতুর্থাংশ! অথচ খাতায়-কলমে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ৪০ বছর পেরনো বিধবাদের ওই পেনশন পাওয়ার কথা।

একই ছবি কেন্দ্রীয় অন্নপূর্ণা যোজনায়। এই প্রকল্পে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা ৬৫ পেরনো প্রবীণদের পাওয়ার কথা খাদ্যশস্য। কিন্তু শহর ও গ্রামে এই সামান্য সুবিধাটুকুও ঘরে তোলেন যথাক্রমে ২.৫% এবং ১.৫% জন। হবে না কেন? এমন প্রকল্প যে আদৌ রয়েছে, সে কথা জানেন দেশের ১৩ শতাংশেরও কম দরিদ্র প্রবীণ।

দেশে আরও হরেক সমস্যার ছিটেফোঁটাও এই সমীক্ষায় স্পষ্ট। যেমন, কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কিংবা রাজ্যের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ নিয়ে যত আলোচনাই এখন হোক, দরিদ্রদের ঘরে স্বাস্থ্যবিমার সুরক্ষা এখনও চোখে পড়ার মতো কম। কম আয়ের পরিবারে তা ২৬%। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমার আওতায় মোটে ২১%। সব মিলিয়ে, এখনও যথেষ্ট প্রসারিত নয় এ ক্ষেত্রে সরকারি বিমার বৃত্ত। অথচ জীবনযাত্রার ধরনে আমূল পরিবর্তনের কারণে অনেক কম বয়স থেকেই যে (সুগার, প্রেশারের মতো) বিভিন্ন অসুখ, শরীরে বাসা বাঁধছে, তা সমীক্ষায় উঠে আসা তথ্য থেকে স্পষ্ট। যথেষ্ট চিন্তার খোরাক সেখানেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pension Senior citizen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE