—ফাইল চিত্র
কর্পোরেট সংস্থাকে ব্যাঙ্ক চালু করতে সায় দেওয়ার প্রস্তাবে দেশ জুড়ে সমালোচনায় সরব বিভিন্ন মহল। গত মাসে এই কথা সামনে আসার পর থেকে ক্রমাগত তোপ দাগছেন বিরোধীরা। তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন, প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর বিরল আচার্য-সহ অনেকে। এই প্রেক্ষিতে আজ ঋণনীতি পর্যালোচনায় উত্তাপ কমানোর চেষ্টা করলেন গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন, এটা একান্তই শীর্ষ ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ কমিটির সুপারিশ। একে আরবিআইয়ের বক্তব্য মনে করা ঠিক নয়।
শক্তিকান্তের দাবি, বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের মত চাওয়া হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। যদিও অনেকের প্রশ্ন, যে কমিটিতে আরবিআই-এর কেন্দ্রীয় পর্ষদের দু’জন সদস্য এবং শীর্ষ ব্যাঙ্কের তিন কর্তা রয়েছেন, তাদের সুপারিশকে একেবারেই রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের মত নয় বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় কি? বিশেষত কমিটির মাত্র এক জন এই প্রস্তাবে সায় দেওয়া সত্ত্বেও যেখানে তা পেশ করা হয়েছে।
দেশের বড় কর্পোরেট সংস্থা এবং যে সব ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফসি) সম্পদের অঙ্ক ৫০,০০০ কোটি টাকার বেশি, তাদের ব্যাঙ্ক খোলায় সায় দেওয়ার সুপারিশ করেছিল কমিটি। অনেকেরই মত, এ ধরনের সংস্থা ব্যাঙ্ক চালালে নজরদারি ছাড়া টাকা হাতে পাবে। এতে অর্থনৈতিক (এবং রাজনৈতিক) ক্ষমতা কুক্ষিগত হবে নির্দিষ্ট কিছু সংস্থার হাতে। প্রস্তাব কার্যকর হলে বিপুল ঋণের বোঝা থাকা এবং রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবশালী সংস্থা ব্যাঙ্ক লাইসেন্স পেতে ঝাঁপাবে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই পরিস্থিতিতে অবস্থা সঙ্গীণ বুঝেই মাঠে নামতে হল শক্তিকান্তকে।
এ দিকে চড়া অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যার মধ্যেই গত দু’এক বছরের মধ্যে পিএমসি ব্যাঙ্ক, ইয়েস ব্যাঙ্ক, লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্ক এবং আইএল অ্যান্ড এফএসের বেহাল দশা সামনে এসেছে। এই অবস্থায় আজ এনবিএফসি ও সমবায় ব্যাঙ্কগুলির উপরে নজরদারি বাড়ানো জরুরি বলে জানিয়েছেন দাস। তবে তাঁর মতে, ইয়েস ব্যাঙ্ক বা লক্ষ্মীবিলাসের যথাক্রমে ৭০০০ কোটি এবং ৩২০ কোটি টাকার বন্ড হিসেবের খাতা থেকে মুছে দেওয়ার মধ্যে বেআইনি বা অনৈতিক কিছু নেই। বরং, আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ। লক্ষ্মীবিলাস ব্যাঙ্কের শেয়ারও মোছা হয়েছে। ফলে ওই সব বন্ড এবং শেয়ারের টাকা লগ্নিকারীরা আর ফেরত পাবেন না। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ ভাবে যদি কোনও ব্যাঙ্ক সমস্যায় পড়লেই তাদের বন্ড বা শেয়ার মোছা হয়, তা হলে বহু মানুষই আর সেখানে টাকা রাখতে চাইবেন না। তখন বাজার থেকে পুঁজি জোগাড়ে সমস্যায় পড়বে ওই সব প্রতিষ্ঠানই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy